কলারোয়ায় এবার কাত্যায়নী পূজায় নজরকাড়লো মেট্রোরেল ও পদ্মাসেতুর থিম
কামরুল হাসান:
কলারোয়ায় এবার কাত্যায়নী পূজায় ভক্ত দর্শনার্থীদের নজরকাড়া আকর্ষণীয় সাজে সেজেছে কাত্যায়নী পূজার মন্ডপ। কলারোয়ায় আকর্ষণীয় থিমে নজরকাড়া আলোকসজ্জায় উদযাপিত হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী এ কাত্যায়নী পূজা। পূজার মন্ডপ স্থাপন করা হয়েছে দিঘি সদৃশ এক বিশাল পুকুরের মাঝে। সেখানে যাতায়াতের জন্য পুকুরের ওপর বানানো হয়েছে বাংলার বহুল আলোচিত পদ্মাসেতুর আদলে এক সাঁকো। যার ওপর দৃশ্যমান করা হয়েছে বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণীয় মেট্রোরেল। দূর থেকে দেখলে মনে হবে পদ্মাসেতুর ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের কাঠামো বানানো হয়েছে বাঁশ দিয়ে। যা অবিকল মেট্রোরেলের রঙের সাথে মিল রেখে কাপড় দিয়ে সুনিপুণভাবে মোড়ানো হয়েছে। একইভাবে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে বানানো হয়েছে পদ্মা সেতু সদৃশ সাঁকো। এককথায় দর্শনীয় ও নান্দনিকও বটে! কলারোয়া উপজেলা সদর থেকে ৩.৫ কিলোমিটার দূরে কয়লা গ্রামের দাসপাড়ায় আয়োজিত এই পূজামন্ডপে দৃশ্যমান হাতে বানানো দেশের উন্নয়নের রোলমডেল পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় করছেন। কয়লা গ্রামের দাসপাড়া সনাতন যুব সংঘ এবার দিয়ে ষষ্ঠবারের মতো এই কাত্যায়নী পূজার আয়োজন করেছে। শনিবার দুপুরে সরেজমিনে কয়লা দাসপাড়ায় যেয়ে দেখা যায়, অনেক স্কুল পড়ুয়ারা ছুটি শেষে এখানে এসে মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতুর থিম অপলকনেত্রে দেখছে। তারা কাপড়ে বানানো মেট্রোরেলের ভিতর দিয়ে পদ্মাসেতু মডেলের সাঁকো দিয়ে মন্ডপের প্রবেশদ্বারে যাচ্ছে। প্রবেশদ্বারের থিমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দিল্লির অক্ষয়ধাম মন্দিরের আকার। অনেকেই প্রাণভরে ছবি ও সেলফি তুলছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ষ্ষ্ঠীপূজার বোধন ও প্রসাদ বিতরণে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী কাত্যায়নী পূজা। দাসপাড়া সনাতন যুব সংঘের সভাপতি ও এই কাত্যায়নী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয় দাস জানান, শনিবার সন্ধ্যার পরে পূজার উদ্বোধন করা হচ্ছে একাত্তরের বীর শহীদদের স্মরণে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে সপ্তাহব্যাপী পূজা-অর্চনার শুভ সূচনা করবেন। এছাড়া উদ্বোধনী দিনে থাকছে আলোচনা সভা, ভক্তিগীতি, ভজন, কীর্ত্তন, বাউল সঙ্গীত। এছাড়া ভগবত গীতা পাঠ ও অন্যান্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান চলবে সপ্তাহজুড়ে। এছাড়া নবমীর দিনের বিশেষ আকর্ষণ হলো কাত্যায়নী ঠাকুরের লাইভ ডিসপ্লে। পূজার আয়োজনে মেট্রোরেল-পদ্মা সেতুর থিম স্থাপনের বিষয়ে জয়দাস বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষ অনেকেই সরকারের উন্নয়নের অনেক চিত্র সচক্ষে দেখতে পায়নি। তাদের কথা ভেবে এই থিম স্থাপনের বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। যেনো তারা কাছ থেকে এই উন্নয়নের চিত্র চোখে দেখতে পায়। এরপর দীর্ঘ সময় লেগে থেকে তাদের পৈত্রিক পুকুরের ওপর সনাতন যুব সংঘের সকলের সহযোগিতায় পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলের আকার সম্বলিত থিম স্থাপন করেন। একইভাবে পুকুরের ওপর স্থাপন করা হয় মন্ডপ ও প্রতিমা। প্রতিমা দর্শনের জন্য আকার দেওয়া মেট্রোরেলের ভিতর দিয়ে পদ্মাসেতুর আদলে তৈরি করা সাঁকোপথে সকলকে পারপার হতে হবে। সকল নির্মাণ ও সার্বিক আয়োজনে তাদের ৫ লক্ষ টাকার উপরে খরচ পড়েছে বলে জয়দাস জানান। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন পূজা উদযাপনের জন্য এক মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করেছেন। উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ রায় আশা করেন, শান্তি-সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ও উৎসবমুখরতার মধ্য দিয়ে সকলের সহযোগিতায় শনিবার শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এই কাত্যায়নী পূজা সুসম্পন্ন হবে।
এ সময় তরুণ উদ্যোক্তা জয়দাস সদাশয় সরকারসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় আগামিতে আরও ভিন্নধর্মী কাত্যায়নী পূজার আয়োজন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
Please follow and like us: