উপরে মাটি নিচে ফাঁকা-শ্যামনগরে অভিনব কৌশলে চলছে বাক্স কল
শ্যামনগর প্রতিনিধি:
কালীগঞ্জ সহ শ্যামনগর আংশিক এলাকায় অভিনব কৌশলে চলছে বাক্স কল ৷ উপরে মাটি নিচে ফাঁকা ৷ গতবছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশে কালীগঞ্জ সহ শ্যামনগর আংশিক এলাকায় বেড়িবাঁধের পাইপ ও বাক্স কল অপসারণ করেন কিন্তু আদৌও কি লোনাপানি উত্তোলন বা পাইপ ও বাক্স কল বন্ধ হয়েছে? এমন প্রশ্ন মুখো রচক হয়েছে ৷ একটি জরিপে জানাগেছে, উপকূল অঞ্চলে ৯৫% প্রভাশালী এবং অর্থশালীরাই মৎস্যঘেরীর মালিক ৷ আর এসব মৎস্যঘেরীতে লোনা পানি উত্তোলনের জন্য ঐ সব প্রভাশালী এবং অর্থশালীর মধ্যে একজন করে ব্যক্তি বাক্সকল নির্মান করে পানি বিক্রি করে আসছে ৷
জনস্বার্থে হাইকোটে ৮১৭৫/২০২১ নং রিট মামলায়
কালিগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রোকনুজ্জামান ও শ্যামনগর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ শহিদুল্লাহ নেতৃত্বে পাইপ ও বাক্স কল অপসারণ করা হয় ৷ কিন্তু
স্বরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পূনরায় মালিকরা আবারও পাইপ ও বাক্স কলের মাটি সরিয়ে লোনাপানি উত্তোলন করেছে ৷
তবে একটি বিশেষ সূত্রে জানাগেছে যে, অভিনব কৌশলে বন্ধ করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাইপ ও বাক্স কল ৷ উপরে মাটি নিচে ফাঁকা ৷ অপসারণের নামে পাইপ ও বাক্স কলের দুই মুখ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিলো ৷ যাতে করে পরে মালিকরা তাদের কার্যক্রম করতে পারে ৷
এদিকে শ্যামনগরে গতকাল ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখ থেকে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছিলেন কর্তৃপক্ষ ৷ তবে তার আগেই বাক্সকল মালিকরা ম্যানেজ করে ফেলেন ৷
শ্যামনগর উপজেলার কয়েকটি বড় বাক্সকল রয়েছে ৷ যা দ্বারা প্রায় হাজার একর মৎস্যঘেরীতে পানি উঠে থাকে ৷ এবং বছরে তাদের আয় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ৷ যার কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই কলের মালিকদের সাথে যোগসাজশে অভিনব কায়দায় পানি উন্নয়ন বোর্ড অভিযান পরিচালনা করেনি ৷
একটি সচেতন মহল জানিয়েছেন, উপকূল অঞ্চলে কর্মসংস্থান থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষেরা সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে ৷ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের বৃহৎ সুন্দরবন রক্ষা করতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন ৷ এ অঞ্চলে লোনাপানি বন্ধ হলে মানুষ বছরে ৩বার ধান চাষ করতে পারবে এবং এলাকার কর্মসংস্থান থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষেরা তাদের কর্মসংস্থান ফিরে পাবে ৷ একজন মৎস্যঘেরীর পরিচালনাকারীর কাছ থেকে জানাগেছে, গত ৫ বছর তার ঘেরীতে কোন লাভ হচ্ছে না ৷ কিন্তু পরিবার স্বচ্ছলতার কারনে এবং লোনা পানির কারনে বাধ্য হয়ে ঘেরী পরিচালনা করছেন ৷ মন্তব্যের শিকলে বাঁধা এই সব মালিকরা শিকার করেছেন যে, তারা মৎস্যঘেরীর বন্ধ হলে এলাকায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এবং এখন ১জন ৫০ বিঘা জমিতে মৎস্যঘেরী পরিচালনা করে আর তখন ৫০ বিঘা জমিতে ১০ জন ধান চাষ করতে পারবে ৷
কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, শনিবার কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর ও কাঠামারির মাঝখানে বাক্সকল ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে যায় এবং লোকজন দিয়ে আপাতত সংস্কার করেছি। তবে এরকম আরও কয়েকটি বাক্সকল আছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মুহূর্তে এসব বাক্সকল ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বাক্স কলগুলো অপসারণ করতে হবে। যত্রতত্র বেড়িবাঁধ ছিদ্র করতে দেওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে এসডিও শুভেন্দ্র ফোনে যোগাযোগ করে অবৈধ বাক্স কল ও পাইপ অপসারণের প্রশ্ন করলে বলেন, আমি নতুন এসেছি এত কিছু তো আমি জানিনা তবে আমার আন্ডারে কোন অবৈধ বাক্স কল ও পাইপ থাকবে না আমি দ্রুত অপসারণ করবো ।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ পানির উন্নয়নবোর্ড দায়িত্বপ্রাপ এসও তন্ময় হাওলাদার বলেন, এই অবৈধ বাক্স কল ও পাইপগুলো অপসারণের জন্য স্যারের সাথে কথা বলেছি। খুব দ্রুত আমরা এই বাক্স কল ও পাইপ গুলো অপসারণ করবো