তামিমের বিকল্প যেন তামিমই, সাকিবকে সত্যি প্রমাণ করবেন লিটন?
স্পোর্টস ডেস্ক:
তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিংয়ে কী হবে?
তামিম ইকবাল বাদ পড়ায় বিতর্ক তো তৈরি হওয়ারই কথা, পাশাপাশি একটা শঙ্কাও তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ওপরের প্রশ্নটাই দেখা দিয়েছে বড় হয়ে – বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটির কী হবে?
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ গৌহাটিতে চলতে থাকা প্রস্তুতি ম্যাচটা যদি সে ক্ষেত্রে কোনো উত্তর হয়ে থাকে, তবে তা বলবে লিটন দাস আর ‘জুনিয়র তামিম’ – তানজিদ তামিমই ভরসা হতে পারেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযানে। শ্রীলঙ্কার ২৬৩ রানের জবাবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রান ২১ ওভারে ১ উইকেটে ১৩২। ফিফটি পেয়েছেন দুই ওপেনার লিটন ও তানজিদ তামিম দুজনই! লিটন অবশ্য ২১তম ওভারেই ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে গেছেন ৫৬ বলে ৬১ রান করে। তানজিদ তামিমের ব্যাট করছেন ৬৮ বলে ৬১ রান নিয়ে।
সাকিব না থাকায় এ ম্যাচে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজকেই তিনে নামিয়েছে বাংলাদেশ।
তানজিদ যেন তামিমের বিকল্প, লিটন যেন সাকিবের কথাই সত্যি প্রমাণ করছেন।
তানজিদ তামিম এরই মধ্যে ফিফটি পেয়ে গেছেন।
বড় তামিম, অর্থাৎ তামিম ইকবালের বিতর্কিতভাবে বাদ পড়া ওপেনিং জুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়াই স্বাভাবিক। একে তো ছোট তামিম অর্থাৎ তানজিদ তামিমের অভিজ্ঞতা কম, বিশ্বকাপে গেছেন মাত্র ৫ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে। তারওপর তানজিদের ব্যাটে আজকের আগে বাংলাদেশের জার্সিতে তেমন প্রতিশ্রুতির দেখাও মেলেনি – ৫ ওয়ানডের মধ্যে ৪ ইনিংস খেলেছেন, তাতে সব মিলিয়ে রান মাত্র ৩৪।
সেই তানজিদ তামিমই আজ শুরু থেকে দারুণ ছন্দে। একেবারে সব বল যে দারুণ নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলেছেন, এমন নয়। তবে আগ্রাসীই ছিল তাঁর ব্যাট। মুখোমুখি নবম বলে কাসুন রাজিথাকে প্রথম চার মেরেছেন, এরপর থেকে তাঁর ইনিংসে এ পর্যন্ত চার এসেছে ৯টি। চার মেরেছেন শ্রীলঙ্কার মূল বোলারদের প্রায় সবাইকেই – রাজিথা, মাদুশঙ্কা, লাহিরু কুমারা, দুনিথ ভেল্লালাগে। ফিফটি পূর্ণ করেছেন ৫৩ বলে।
তামিম একদিকে প্রতিশ্রুতি দেখাচ্ছেন, অন্যদিকে লিটন ফেরাচ্ছেন পুরোনো মোহ – ছন্দে থাকা লিটনের ব্যাট যে মোহ জাগায় আর কী! গতকাল বেসরকারি টিভি চ্যানেল টি-স্পোর্টসে এক সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, গত কিছুদিনে ফর্মে না থাকা লিটনই এই বিশ্বকাপের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হতে পারেন। সাকিব আজ ম্যাচটা খেলছেন না, তবে সাকিবকেই যেন সত্যি প্রমাণ করার প্রতিশ্রুতি লিটনের ব্যাটে।
মুখোমুখি চতুর্থ বলে ঝুঁকি নিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে হয়তো ০ রানে থাকার অস্বস্তিটা কাটিয়েছেন, পঞ্চম বলে রাজিথাকেই প্রথম বাউন্ডারি মেরেছেন। এরপর কিছুক্ষণ সময় লেগেছে তাঁর সেট হতে। কিন্তু একবার সেট হয়ে গেলে, ছন্দ খুঁজে পেলে লিটন কী করতে পারেন – বাংলাদেশের ক্রিকেটে বহু পরিচিত সে দৃশ্যই আজ অনেক দিন পর আবার দেখা যাচ্ছে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত জুলাইয়ে চট্টগ্রামে একটি ফিফটির বাইরে লিটনের ব্যাটে সর্বশেষ ১০ ওয়ানডে ইনিংসে কোনো ফিফটি ছিল না, ৩০-এর ঘরেই গেছেন মাত্র একবার। সেই লিটন আজ কী দারুণ ব্যাটিং করছেন! তাঁর একেকটি বাউন্ডারি যেন চোখে মায়াঞ্জন এঁকে দেয়া সব শটে! পাথিরানাকে চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছেছেন ৩৯ বলে, ইনিংসে চার মেরেছেন ১০টি। পাথিরানাকেই সবচেয়ে বেশি মেরেছেন – ৪টি। চার মেরেছেন অবশ্য ভেল্লালাগে, রাজিথা, মাদুশঙ্কাসহ সবাইকেই।
অবশ্য এটি তো নিছকই একটা প্রস্তুতি ম্যাচ। এ ম্যাচ বিশ্বকাপের পথে আশাই জাগাতে পারে শুধু। বিশ্বকাপে কী করতে পারবেন তামিম-লিটনরা, সে উত্তর তো সময় দেবে।