শ্যামনগর হসপিটালের জরুরী বিভাগে অক্সিজেন না পেয়ে রোগীর মৃত্যু
শ্যামনগর প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে অক্সিজেন না পেয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি হলেন, শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত মোহর আলী গাজীর ছেলে মুনসুর আলম (৬২)।
মৃতের ছেলেসহ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকায় জরুরী বিভাগে নেয়া হলে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সময় অক্সিজেনের সিলিন্ডার না থাকার অজৃহাতে প্রয়োজনীয় মুহুর্তে তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়নি। বরং সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও তার সহকারীগন জরুরী বিভাগের জন্য বরাদ্দের তিনটি সিলিন্ডার অন্য রোগীদের জন্য ব্যবহারের ফলে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা তাদের জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে ঘটনাটি ঘটে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয় জরুরী বিভাগে ঐ সময় নির্দিষ্ট চিকিৎসকের পরবির্তে অন্য একজনকে দিয়ে বদলী ‘ডিউটি’ করানো হচ্ছিল।
মৃতের ছেলে মেহেদী হাসান জানান, শুক্রবার বিকালে বাড়িতে অবস্থানকালে তার পিতার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এসময় বাড়িতে থাকা সিলিন্ডারের অক্সিজেন লাগিয়ে এ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেয়ার পর সেখানে মেশিনের সহায়তায় তার পিতাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। কয়েক মিনিট পরে বিদ্যুৎ চলে গেলে তার পিতা তীব্র দমের কষ্টে ভুগতে থাকে। এসময় সিলিন্ডারের অক্সিজেন দেয়ার অনুরোধ করা হলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক শিরুজ্জামান ও তার সহকারী জরুরী বিভাগে সিলিন্ডার শেষ হয়ে গেছে বলে জানায়। এসময় তারা অনেক অনুনয় বিনয় করার প্রায় ৩০ মিনিট পর একটি সিলিন্ডার আনা হলেও সেটা সংযুক্ত করার আগেই তার পিতার মৃত্যু হয়।
তিনি অভিযোগ করেন জরুরী বিভাগে কর্তব্যরতরা তার পিতার চিকিৎসায় চরম গাফিলতি ও অবহেলা করেছেন। রোগীর অবস্থাকে গুরুত্ব না দেয়ায় তারা সময়মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারায় তার পিতার মৃত্যু হয়েছে। র্নিধারিত চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে শিরুজ্জামানকে দিয়ে বদলী ‘ডিউটি’ করাচ্ছিলেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় তদন্তপুর্বক সেখানে কর্মরতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে ডাঃ শিরুজ্জামান বলেন, জরুরী বিভাগে নেয়ার পর কনসেনট্রেটর মেশিনের সহায়তায় অক্সিজেন দেয়া হয়। তবে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মেশিন কাজ না করায় একটু সমস্যার তৈরী হয়। একই সময়ে বৃষ্টি শুরু হলে ওয়ার্ড থেকে অক্সিজেন আনতে যেয়ে কিছুটা দেরী হলেও মারা যায় যাওয়ার আগে তাকে অক্সিজেন সংযোগ দেয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জিয়াউর রহমান বলেন অক্সিজেনের কোন অভাব নেই। কনসেনট্রেটর এর মাধ্যমে রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হলেও বিষয়টি বুঝতে না পেরে রোগীর স্বজনরা ভুল অভিযোগ করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও তিনি জানান।