শ্যামনগরে যাতায়াতে জন দুর্ভোগের গ্রামের নাম পূর্ব জেলেখালী
শ্যামনগর প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বস্তরে পৌঁছালেও এক যুগ ধরে কাঁচা রাস্তার জনদুর্ভোগ কাটাতে পারেনি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব জেলেখালী গ্রামবাসী। মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব জেলেখালি গ্রামের ১ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় উন্নয়নের ছোঁয়া এখনো লাগেনি। প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ থাকলেও ঐএলাকার চলা চলের রাস্তাটি ১২ বছর ধরেই কাঁচা থেকে গেলো পাকার মুখ দেখলো না।
গ্রামটিতে ১১০টি পরিবারের বসবাস, লোক সংখ্যা প্রায় ৮০০ এর অধিক। জেলেখালীতে ত্রিপানি মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ ও ২৫ নম্বর মথুরাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। এই গ্রাম থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ২টি পড়াশোনা করে, তাদের যাতায়াতের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় । শিক্ষার্থীরা বর্ষার সময় কাদা রাস্তার জন্য স্কুলে যেতে পারেনা ফলে পড়াশুনার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
পূর্ব জেলেখালি উন্নয়নমুখী এলাকায় ৬০ টি অধিক সমন্বিত সবজি চাষের প্লোট রয়েছে । এই এলাকার কৃষকদের বর্ষার মৌসুমে কাঁচা রাস্তা দিয়ে সবজি বাজারে নিয়ে যেতে হিমসিম খেতে হয়। সরজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি সমন্বিত সবজি চাষ প্লোটে বিপুল পরিমাণে সবজি দেখা গিয়েছে। সাথে ধান, পানিতে গলদা চিংড়ি সহ সাদা মাছ চাষ করছে। ২০১৮ সালে এই রাস্তাটি পাকা করার জন্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছি কিন্তু আজও সেই রাস্তা পাকা হয়নি।
ত্রিপানি বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিমা মন্ডল বলেন, বৃষ্টির সময় এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে আমাদের খুব সমস্যা হয়। এছাড়া এ রাস্তার দুই পাশে কাটাযুক্ত বাউলা গাছ কাদায় কাটা পড়ে থাকে, আমাদের পায়ে কাঁটা ফুটে যায়। আমাদের একটাই দাবি রাস্তাটি পাকা হোক।
স্থানীয় কৃষক কানাই ও মঙ্গল মণ্ডল বলেন, সপ্তাহে পাঁচটি বাজারে আমাদের পূর্ব জেলেখালি এই কৃষি খামার থেকে সবজি নিয়ে যেতে হয়, বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মন সবজি ওঠে। কিন্তু যাতায়াত এই রাস্তা কাঁদা থাকার কারণে সবজিগুলো সামনে পিচের রাস্তায় নিয়ে যেতে চরম কষ্ট হয়।
কৃষি পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক গোষ্ঠ মন্ডল বলেন, আগে এই এলাকার কৃষকরা এক ফসলে ধান চাষ করত পরে সেই জমিতে কৃষি খামার করে একাধিক ফসল উৎপাদন সহ মাছের চাষ করে এলাকার কৃষকরা মোটামুটি ভালই আছেন। মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয় আমাদের গ্রামে। সেখানেই যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ সে কারণেই আমাদের কৃষকরা ধরা খেয়ে যাচ্ছে, সবজির ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। আমাদের দাবি দীর্ঘদিনের এই কাঁচা রাস্তাটি যাতে পাকা হয় সরকারের কাছে আমরা এই দাবি করি।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা বলেন, পূর্ব জেলাখালী এলাকার জনগণের একমাত্র দাবী ওই রাস্তাটি সংস্কার করা। আমি জেনেছি ওই গ্রামের একটি অংশে কার্পেটিং এর বাজেট হয়েছে। বাকি অংশের জন্য ইতিমধ্যেই উপজেলা প্রশাসনসহ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের প্রস্তাবনার মধ্যে দিয়ে রেখেছি দ্রুত কাজটি করার জন্য আমি উদ্যোগ গ্রহণ করছি ।