নাইকো মামলা: এফবিআই কর্মকর্তা ও কানাডার দুই পুলিশকে সাক্ষী করতে আবেদন

অনলাইন ডেস্ক:

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৯-এর অস্থায়ী এজলাসে বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের জবানবন্দি নেন।

অন্যদিকে এ মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এক কর্মকর্তা ও কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এ আবেদন করেন।

গত ২৩ মে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর দুটি ধার্য তারিখে বাদী জবানবন্দি দেন। মঙ্গলবার জবানবন্দি শেষ হওয়ার পর আসামি এমএএইচ সেলিমের আইনজীবী জাকারিয়া হায়দার ও তারেক রহমানের বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম কোয়েল বাদী মাহবুবুল আলমকে জেরা করেন।

উভয়ই বাদীকে প্রশ্ন করেন- নাইকো কেলেঙ্কারির ঘটনা অনুসন্ধান করাকালীন সেলিম ও মামুনের কোনো সম্পৃক্ততা পেয়েছিলেন কিনা?

উত্তরে বাদী বলেন, তিনি অনুসন্ধানকালে নাইকো কেলেঙ্কারির সঙ্গে দুজনের কোনো সম্পৃক্ততা পাননি। পরে তদন্ত কর্মকর্তা তাদের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন।

এদিকে এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা ডেবরা ল্যাপ্রেভোট গ্রিফিত ও কানাডার রয়াল মাউন্টেড পুলিশের দুই কর্মকর্তা কেভিন ডুগান এবং লিওড শোয়েপকে এ মামলার সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করার একটি সম্পূরক আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল ও খুরশিদ আলম আদালতকে বলেন, ২০১৮ সালে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম একটি দরখাস্ত দিয়ে তিন কর্মকর্তাকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছিলেন। ওই আবেদনেরই একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, আপনাদের আবেদনে যাদের সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছেন তাদের কোনো ঠিকানা নেই। সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করলে তাদের হাজির হতে সমন পাঠাতে হবে; কিন্তু ঠিকানা ছাড়া সমন যাবে কিভাবে?

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল ও দুদকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আমরা নতুন করে ঠিকানাসহ আরেকটি আবেদন আগামীকাল জমা দেব।

আদালত তখন এ আবেদনের ওপর আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

এ মামলায় অন্য যারা আসামি তারা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এদের মধ্যে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার হাজিরা দেন। আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক মন্ত্রী মওদুদ আহমদ, একেএম মোশারফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মৃত্যুবরণ করায় ইতোপূর্বেই তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)