গতবারের চেয়ে ডেঙ্গুতে এবার মৃতের সংখ্যা প্রায় ২২ গুন বেশি
অনলাইন ডেস্ক:
গত বছর প্রথম ৯ মাস ১০ দিনে যতো ডেঙ্গু আত্রান্ত রোগী মারা গেছে এবার মৃতের সংখ্যা তার চেয়ে প্রায় ২২ গুন বেশি। মৃত্যু ও আক্রান্তে গত মাসে রেকর্ড গড়ার পর চলতি মাসেই সেই রেকর্ড ভাঙার পথে হাঁটছে এডিস। এমনটিই জানিয়ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করে ডেঙ্গু ডেথ রিভিউ কমিটি জানিয়েছে, আগামীতে আরও ভয়াবহ হবে পরিস্থিতি, কঠিন হবে রোগী বাঁচানো। তাই প্রাথমিক লক্ষ্মণ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাছের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কঠিন অবস্থা মোকাবিলায় আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলের প্রতিটি ওয়ার্ডেই চালু করা হবে বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি সব বারের চেয়ে আলাদা। যেটা অনুমান করা যাচ্ছে আগামীতে আরও ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু আসবে। যতদিন যাবে ততদিন খারাপভাবে রোগী হাসপাতালে আসবে। চিকিৎসকরা চেষ্টা করার পরও রোগীকে বাঁচাতে পারবে না। তাই সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে হবে।
মশার কামড়ে হাসপাতালে আসা রোগী ও তার স্বজনদের নাজেহালের দৃশ্য ঢাকা মেডিকেলসহ ঢাকার প্রায় হাসপাতালের বিরাজমান। ডেঙ্গু রোগীতে ঠাসা প্রায় সব হাসপাতাল।
এডিস মশার তাণ্ডবে কতোটা নাকাল বাংলাদেশ তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া প্রতিদিনের হাল-নাগাদ তথ্য। গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা যায় ৩২ জন। এ বছর যা প্রায় ২২ গুন বেশি। আক্রান্তের হিসাব যেখানে গত বছর থেমেছে ৬২ হাজার ৩৮২ জনে, সেখানে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাস ১০দিনেই তা ঠেকেছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩২৮ জনে। তেমনি গত মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ড করার পর চলতি মাসও রয়েছে নতুন রেকর্ড গড়ার পথে।
এমন ভীতিকর অবস্থার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ডেঙ্গু ডেথ রিভিউ কমিটি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির জানিয়ে গেলেন, দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। বাড়তে পারে মৃত্যুহার।
এ অবস্থায় সন্দেহ হলেই কাছের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, যখনই কোনো ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিবে, যেমন তীব্র পেটে ব্যথা, বমি-ডায়রিয়া যে কোনো জায়গা থেকে রক্ষ বের হওয়া বা একেবাবে দুর্বল বোধ করা সাথে সাথে কাছের কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। বাড়িতে থাকা যাবে না।
ভয়াবহতা মোকাবেলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫২টি ওয়ার্ডে শিগগির চালু হচ্ছে বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থা। যেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে গুরুতর আক্রান্তদের বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক।
হিসাব বলছে, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রতি ২শ’ জনে মৃত্যু হচ্ছে একজনের।
Please follow and like us: