সিরাজুল আলম খান ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
এস এম হাবিবুল হাসান :
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের অক্লান্ত যোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি নির্মাণের অন্যতম প্রধান কারিগর সিরাজুল আলম খান। তিনি চেয়েছিলেন একটি সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ। সেলক্ষ্য ১৯৭২ এর ৩১ অক্টোবর গঠন করেন নতুন দল। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের বাইরে আরেকটি শক্তিশালী নতুন দল গঠন বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হতে পারত। সংসদের ভেতর ও বাইরে শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া সংসদীয় গণতন্ত্র অচল।আওয়ামী লীগ যদি জাসদকে নিয়মতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করার সুযোগ দিত, বাংলাদেশের ইতিহাস অন্য রকম হতো। তাহলে মুজিব হত্যা, রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রবেশ এবং পাকিস্তানপন্থী ও মৌলবাদী শক্তি উত্থান ঘটত না।
শুক্রবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাঘরে বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, নিউক্লিয়াস, বিএলএফের প্রতিষ্ঠাতা, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীনতার রুপকার সিরাজুল আলম খান স্মরণে “সিরাজুল আলম খান এবং আগামীর বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মোসলেম’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, জেএসডি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হাকিম ও মোশাররফ হোসেন, খুলনা জেলা জেএসডির সাধারণ সম্পাদক স ম রেজাউল করিম, জেলা জেএসডির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা মীর জিল্লুর রহমান।
জেএসডির সাতক্ষীরা জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সালাউদ্দিন ইকবালের সঞ্চালনায় ও জেলা জেএসডির আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলা, জাসদের জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার কাজের আলী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, নাগরিক ঐক্যর সভাপতি ড. এ্যাড. রবিউল ইসলাম খান, জেএসডি নেতা শুধাংশেখর সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, মুক্ত রাজনৈতিক দলের নেতা আবু কাজী, আব্দুল জব্বার প্রমুখ।
সিরাজুল আলম খান এবং আগামীর বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত বাংলাদেশের পশ্চাৎযাত্রাও ঘটত না। বর্তমান বাংলাদেশের চেয়েও সেই বাংলাদেশের অবস্থান আরও অনেক উঁচুতে থাকত। এই কারণেই একদলীয় শাসন কায়েমে সেসময়কার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সমর্থন ছিল না।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সিরাজুল আলম খানকে নিন্দা করতেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না যে বঙ্গবন্ধু ও সিরাজুল আলম খান—একে অপরের প্রতি ভালোবাসা মৃত্যুকাল অবধি অক্ষুণ্ন ছিল। সে সময় বঙ্গবন্ধুর আশঙ্কা হয়, তাঁর দলের লোকেরা সিরাজুল আলম খানকে হত্যা করার চেষ্টা করতে পারেন, পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারে। তাই তাঁকে দেশের বাইরে চলে যেতে বলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের চিত্ত সুতারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তিনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট রেডিওতে শুনতে পেলেন বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার খবর। সেদিন তিনি উচ্চস্বরে কাঁদছিলেন বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের এই মহান বীর।
সিরাজুল আলম খানকে রাজনীতিক হিসেবে ভালো বলতে না পারলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতাই তাঁর সাফল্যের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের তৎপরতার জন্য যদিও ম্লান হয়ে গেছে সে সাফল্যের অনেকখানি।
Please follow and like us: