সাতক্ষীরায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
রঘুনাথ খাঁ:
‘১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের
বিনিময়ে এ দেশের স্বাধীনতা এসেছিল। এ সময় এক কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। দু’লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানি হয়েছিল। তাই স্বাধীনতার পাশাপাশি এসব ত্যাগের মূল্য দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা ও চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে হবে, মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে।’
বুধবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছয়তলা বিশিষ্ঠ নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষে আমাদের দেশে অনেক মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। তবে এখন আমাদের দেশ কৃষিতে অনেক বিপ্লব ঘটিয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, সততা দেশাত্মবোধ, মানবিকতাবোধ, দায়িত্ববোধ ও নিজ ধর্মের প্রতি মূল্যবোধ ছাড়া জীবনে সফলতা অর্জন করা যায় না। বিদেশে কাজ করতে যাওয়া আমাদের শ্রমিকদের রেমিটেন্স ও বাংলাদেশের গার্মেন্টস
খাত আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
নিজের ভাগ্যের উন্নয়নে পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। ১৯৭৫-১৯৭৬ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশুনা করতে
পারায় তিনি যার পর নেই আনন্দিত। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে পড়াশুনা করাকালিন বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, আপনার জীবনের সবচেয়ে সেরা সময় কোনটি, তার উত্তরে আমি
নিশ্চয়ই বলবো সাতক্ষীরা কলেজে পড়াশুনার সময়।
এ ছাড়া তিনি তার কলেজ জীবনের শিক্ষক হিসেবে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, উপাধ্যক্ষ আমিন খান, প্রফেসর কলিমুল্লাহ, প্রফেসার অরুন কুমার,তবিবুর রহমান, অলিউল্লাহ, আবুল খায়ের, এনামুল হক ও আবুল কালামের নাম উচ্চারণ করেন।’
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ আয়োজিত কলেজ ক্যাম্পাসে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানউল্লাহ আল হাদী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সাংসদ মীর
মোস্তাক আহম্মেদ রবি, সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোঃআব্দুল আলীম আল রাজী, জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবীর, জেলা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত
ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্টার মুন্সি মোঃ মশিউর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিষ্টার সাইফুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ
নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শুরুতেই পব্রিত কোরান তেলাওয়াত ও পবিত্র গীতা পাঠের পর হীরা মল্লিক ‘এ শুধু গানের দিন, এ লগন গান শোনাবার’, অনিষা রায় ‘খোলা আকাশকে এত ভালবাসা’, কেয়া ঢালী সর্বনাশা পদ্মা নদী’ সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান শেষে কলেজ ছাত্র শৈকত রায় তার নিজের হাতে আঁকা প্রধান বিচারপতির ছবি প্রধান বিচারপতির হাতে তুলে দেন।
এর আগে প্রধান বিচারপতি সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে আসেন। সাড়ে ১০টায় সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে তিনি বিচারকমন্ডলীর উদ্দেশ্যে তার জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দেন।
এরপর সকাল সোয়া ১১টায় তিনি বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যয় কুঞ্জ’ উদ্বোধন করেন।