পারুলিয়ায় হামিদ ও রউফের চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার:
সাতক্ষীরা দেবহাটার পারুলিয়ায় জমজমাট হয়ে উঠেছে চিহ্নিত দুই মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ (৫০) ও আব্দুর রউফ ওরফে খোড়া রউফ (৪৫)’র মাদক ব্যবসা। প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর ধরে চলমান তাদের রমরমা এ মাদক কারবারে রীতিমতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সর্বমহলে।
মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ পারুলিয়া শহীদ কাশেম পার্ক সংলগ্ন এলাকার মৃত কেরামত আলীর ছেলে এবং অপর মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার মাজেদ মোল্যার ছেলে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাতভর নানা কৌশল অবলম্বন করে ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিল বিক্রি করে চলেছেন এলাকার চিহ্নিত দুই মাদক কারবারি।
মাদক নির্মূলে বর্তমান সরকার ও সাতক্ষীরার পুলিশ প্রশাসন যখন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে চলেছেন, ঠিক তখনই এ দুই মাদক কারবারির দৌরাত্ম বৃদ্ধি ও রমরমা মাদকের বিকিকিনিতে ব্যাপক ধ্বস নেমেছে এলাকার যুব ও ছাত্র সমাজে।
সাম্প্রতিক সময়ে স্কুল ও কলেজ পড়–য়া ছাত্র ও যুবকদের বড় একটি অংশ ঝুঁকে পড়েছেন মাদক সেবনে। উঠতি বয়সি আগামী প্রজন্মের এ মাদকাসক্তিতে উদ্বিঘœ হয়ে পড়েছেন আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাদকের টাকা যোগান দিতে এলাকার কিশোর ও যুবকেরা জড়িয়ে পড়ছেন চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে।
মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ ও আব্দুর রউফ ইতোপূর্বে মাদকসহ একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাদকসেবী জানায়, প্রতি পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দুই’শ থেকে আড়াই’শ টাকায় এবং প্রতি বোতল ফেনসিডিল আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজারে বিক্রি করছেন মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ এবং আব্দুর রউফ। নির্দ্দিষ্ট কোন চাকরি বা ব্যবসা না থাকায় এ টাকার যোগান দিতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। ফেনসিডিল ও ইয়াবা’র চলমান এ দামকে ‘উচ্চমূল্য’ বলে অবিহিত করছেন এসব মাদকসেবীরা। মাদক সেবনের কারন জানতে চাইলে এসব মাদকসেবীরা বলেন, প্রেমে ব্যার্থতা, রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া, পারিবারিক কলহ থেকে সৃষ্ট মানসিক বিকারগ্রস্থতা বা সঙ্গদোষের কারনে মাদক সেবনে জড়িয়েছেন অধিকাংশরাই। মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বললে মাদকসেবীরা বলেন, ‘হাতের কাছে পাচ্ছি, তাই খাচ্ছি; যখন পাবোনা, তখন আর হয়তো খাবোনা’।
মাদক ব্যবসার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে দুই মাদক ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদেরকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। মাদক ব্যবসার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তাদের পরিবার। আব্দুল হামিদের ভাই আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে মাদক ব্যবসা করছেনা। তবে আব্দুল হামিদ ও আব্দুর রউফের কাছ থেকে এখনও নিয়মিত মাদকের যোগান মিলছে বলে নিশ্চিত করেছেন মাদকসেবীরা।
এদিকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়ে কোন ছাড় নেই উল্লেখ করে দেবহাটা থানার ওসি বাবুল আক্তার বলেন, মাদক নির্মূল ও মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)