মিথ্যা মামলায় জেলহাজতে থাকা স্বামীর মুক্তি দাবি করে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জেলা হাজতে থাকা স্বামীর মুক্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হত দরিদ্র স্ত্রী। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলারোয়া উপজেলার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের বাবলু ধাবকের স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী চয়না খাতুন। সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্রে ৩ শিশু সন্তান নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি সংসারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যাক্তিটি মিথ্যা মামলায় জেলের ঘানি টানছে উল্লেখ করে বলেন, প্রর্ব শত্রæতার জের ধরে প্রতিবেশী মৃত আনছার মালীর ছেলে জামায়াত নেতা সরোয়ার মালী সরসকাটি ও কাজীরহাট এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকের শাখা নিয়ে হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সরোয়ার মালী কালো টাকার প্রভাব খাটিয়ে তার স্বামীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে আটকে রেখেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৭/০৭/২৩ তারিখে এলাকার আনছার মালীর ছেলে সরোয়ার মালী তার ছোট ভাই কেছমত মালী ও তিন সন্তানের নামে গ্রামবাসিদের বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলায় হয়রানী ও অন্যের জমি দখল করে রেখেছেন বলে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অভিযোগে তার স্বামী বাবলু ধাবকসহ গ্রামের প্রায় অর্ধশত মানুষ স্বাক্ষর করেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে ওসি কলারোয়াকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। পুলিশ তদন্তকালে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ১৫/০৭/২৩ তারিখে রাত দেড়টার দিকে সরোয়ার মালীকে আটক করতে তার বাড়িতে যায়। সরোয়ার মালী পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ঘরের চালের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় পা পিছলে সরোয়ার মালী পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। পুলিশ আহত অবস্থায় তাকে আটক না করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে পুলিশ সুস্থ হয়ে থানায় হাজির হওয়ার কথা বলে চলে যায়। ১৫ আগস্ট তার স্বামী বাবলু ধাবক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন।
এ ঘটনার ১৫ দিন পর সরোয়ার মালী বাদী হয়ে বিজ্ঞ আমলী ৪ নং আদালত সাতক্ষীরায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আমার স্বামী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সরোয়ার মালীর পা ভেঙ্গে দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বাদীর দায়েরকৃত ওই মামলায় আমার স্বামী, সন্তানসহ সরোয়ার মালীর চাচাত ভাই সিদ্দিক মালী ও ভগ্নিপতি রবিউল ইসলামকেও আমাসী করা হয়েছে। যাহা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। বিষয়টি জানতে পেরে গত ১০ আগস্ট আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমার স্বামী আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত আমার স্বামীর জামিন নামঞ্জুর করেন। সেই থেকে আমার স্বামী জেলহাজতে আছে।
চায়না খাতুন কান্নজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা হত দরিদ্র মানুষ। প্রতিদিন অন্যের ক্ষেতে কাজ না করলে সংসার চলে না। তিন সন্তান নিয়ে তিনি এখন অনাহারে অর্ধহারে দিন যাপন করছেন। তিনি তার স্বামীর জামিনে মুক্তির প্রার্থনা করে বলেন, স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আবু বক্কার শেখের দ্বৈত ভূমিকার জন্য তার স্বামীসহ অন্যরা মিথ্যা মামলায় হয়রানী পাচ্ছে।
একই সাথে তিনি মামলা বাজ অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ী সরোয়ার মালী ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।