আশাশুনি নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন 

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি দুর্নীতিবাজ মোঃ শিহাবুদ্দীনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকাল ১১ টায় সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্রে এক সংনবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসীর পক্ষে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মোঃ রেজাউল সানা, স্থানীয় ইউপি সদস্য এটিএম গাজী ও এলাকাবাসী রোকনুজ্জামান এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিভাবক সদস্য মোঃ রেজাউল সানা বলেন, কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এলাকার একটি স্বনামধন্য  প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পারভিন সুলতানা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে আসছেন।  এরপর থেকে তিনি লাগাতার দূ্ণীতি করে আসছেন। এতে বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিগত ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। কিন্তু  প্রধান শিক্ষক নিয়োগের কোন উদ্বোগ গ্রহণ না করে পারভীন সুলতানা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োজিত থেকে সু-কৌশালে তার স্বামী দূর্নীতিবাজ মোঃ শিহাবুদ্দীনকে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, নিজের ছেলে ইয়ামিনকে দাতা সদস্য ও ভাইপো কালামকে অভিভাবক সদস্য করে নিয়োগ বানিজ্য শুরু করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থে এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন সহ নানাবিধ কর্মসুচি পালন করে। কিন্তু এসবের কোন প্রতিকার পায়নি তারা।
তারা অভিযোগ করে বলেন, মোঃ শিহাবুদ্দীন গাজী সভাপতি হওয়ার পর নিজের স্ত্রী পারভীন সুলতানাকে স্ব-পদে বহাল রেখে তার সহায়তায় প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রেখে দূর্নীতির মাধ্যমে ছেলে দাতা সদস্য ইয়ামিন ও ভাইপো অভিভাবক সদস্য কালাম গাজী পরষ্পর যোগসাজসে ৪র্থ শ্রেণির ৪টি এবং ৩য় শ্রেণির ১টি শূন্য পদের জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এদের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী পদে কাকবসিয়া গ্রামের মোঃ মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে ১০লক্ষ টাকা, আয়া পদে একই গ্রামের রেখসোনা খাতুনের কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণ করেন। একইভাবে একজন অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নকর্মী ও একজন ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগের জন্য প্রতিটি পদের জন্য একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে আরো প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেছেন। বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মোঃ রেজাউল সানা ও ইউপি সদস্য এটিএম গাজীকে কিছু না জানিয়ে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০আগস্ট আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে সভাপতির উপস্থিতিতে সকল দরখাস্ত যাচাই বাছাইয়ের কার্যক্রম শেষ করেছেন। যে কোন মূহুর্তে নিয়োগ সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া শেষ করবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
রেজাউল সানা আরো বলেন, দূর্নীতিবাজ মোঃ শিহাবুদ্দীন ইতিপূর্বে বড়দল আফতাবুদ্দীন কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৮ জন ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়োগ বানিজ্য করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে। আমরা কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে ওই দূর্নীতিবাজের হাত থেকে রক্ষা করতে চাই। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন না করে সভাপতি নিজে তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাইপো সহ অপারাপার অভিভাবক সদস্য একত্রে প্রায় আশি লক্ষ টাকা বাণিজ্যের চেষ্টা করে চলেছেন।
তিনি ওই দূর্নীতিবাজ সভাপতি মোঃ শিহাবুদ্দীন, তার স্ত্রী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষীকা পারভিন সুলতানা, তাদের বড় ছেলে দাতা সদস্য ইয়ামিন এবং আপন ভাইপো কালামের হাত থেকে কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে দূর্নীতি মুক্ত ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)