ভাইকে দেখালেন বাঁচার স্বপ্ন, দিলেন নিজের কিডনি
হবিগঞ্জের মাধবপুরের নিজের একটি কিডনি দিয়ে বড় ভাইকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন ছোট ভাই। ভ্রাতৃত্বের এমন দৃষ্টান্ত গড়লেন উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছোট ছেলে আতাউল ইসলাম পলাশ।
শনিবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার শেষে দুই ভাই বর্তমানে চিকিৎসাধীন। ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের এমন ভালোবাসা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রশংসায় ভাসছেন ছোট ভাই।
জানা গেছে, মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার তিন ছেলে। মানিক মিয়া চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদে দফাদার হিসেবে কর্মরত। সৌদি প্রবাসী বড় ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত গড়েছেন ছোট ভাই। নিজের জীবনের কথা না ভেবে একটি কিডনি দিয়ে বড় ভাইয়ের জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান দফাদার মানিক মিয়ার বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম সবুজ। এর মধ্যে হঠাৎ সাইফুল ইসলাম সবুজের কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। পরে সাইফুল ইসলাম সবুজ সৌদি আরব থেকে দেশে চলে আসেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জানান সাইফুল ইসলাম সবুজের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর থেকে ডায়ালাইসিস করেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
চিকিৎসকরা সবুজের দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা বলেন। এমন দুঃসংবাদে ভেঙে পড়ে তার পরিবার। পরিবারের পক্ষে সবুজের চিকিৎসার ব্যয় বহন করাও সম্ভব নয়। তাছাড়া কিডনিই বা পাওয়া যাবে কোথায়। এ নিয়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবার।
সে সময় সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলাম সবুজের আপন ছোট ভাই আতাউল ইসলাম পলাশ ভাইকে বাঁচাতে তার পাশে দাঁড়ান। স্বেচ্ছায় নিজের কিডনি বড় ভাইকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে শনিবার (১২ আগস্ট) পরিবারের সবার মতামতের ভিত্তিতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। সকাল ৬টার দিকে তাদের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। চার ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে দুই ভাই সুস্থ আছেন।
সাইফুল ইসলাম সবুজের বাবা মানিক মিয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অপারেশনের পর দুই ভাই সুস্থ আছেন।
চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, সবার সহযোগিতায় সবুজের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এটি ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।