ঝাউডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা কাশেমের পকেটে

বিশেষ প্রতিবেদক:

ঝাউডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে জনবল নিয়োগ সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে জানাজায়, সাংবাদিক পরিচয়ে ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছে, এম এ কাশেম। বিদ্যালয়ের জনবল নিয়োগ বাণিজ্য , বিদ্যালয়ের পুকুর খননের নামে টাকা আত্মসাৎ , জাল সনদে শিক্ষকতা সহ বিভিন্ন অনিয়ম‌ ও দুর্নীতি করে আসছে এই শিক্ষক। একের পর এক অপরাধ ও অর্থনৈতিক দুর্নীতি কর্মকাণ্ড সাথে জড়িত হলেও ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পায়না।

নিয়োগ বাণিজ্যর নামে প্রায় অর্ধ কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতি করে সত্যকে আড়াল করে নিজেকে পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও ক্ষমতাশীল দলের পরিচয় দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ আর অর্থ কামানোর পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে।

ঝাউডাঙ্গা সদর থানা যুব লীগের সহ সভাপতি,শেখ আব্দুল খালেক জানায় , অর্থলোভী , টাউট বাটপার ও প্রতারক এম এ কাশেম বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। নিজের পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে অর্ধ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে । এই ধরনের প্রতারক শিক্ষক আমাদের স্কুলে থাকবে আমরা সেটা চাই না।

চাকুরী প্রার্থী ইসমাইল হোসেন ও ইমরান হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, আমরা পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু আমাদের টাকা না থাকায় আমাদের চাকুরীটা হয়নি। আমাদের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করে প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেম। আমাদের চাকুরীর প্রয়োজন নাই,কিন্তু আমার চাই নিয়োগ টা স্বচ্ছ হোক এবং এই দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেম অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছেন। অবৈধ প্রক্রিয়ায় ২৩ শে মার্চ নিয়োগ সীট ডিজির প্রতিনিধি দ্বারা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আল মামুনের স্বাক্ষর জাল করে এমপিও সীট জমা দেন। সূত্র মতে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হতে হলে বি,এড সার্টিফিকেট থাকা আবশ্যক। অসৎ উপায়ে দুর্নীতি করে এম এ কাশেম অবৈধ বি,এড সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এম এ কাশেমের বিরুদ্ধে আরো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তৎকালীন ৫ বছর ইংল্যান্ড প্রবাসী থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। ২০১৪ সাল সময়ে বাগেরহাট জেলায় একটি বিদ্যালয় শিক্ষকতা করেন। সেখানে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অপরাধে কাশেমের বিরুদ্ধে মামলা হয়। একপর্যায়ে কাশেম সেখান থেকে চলে আসেন সাতক্ষীরা জেলায়। পরবর্তীতে বৈকারী কুশখালি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। সেখানেও বিভিন্ন দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে।

বিদ্যালয়ের সংস্কার ও পুকুর খননের নামে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে এম এ কাশেম। পাঁচটি পদে জনবল নিয়োগের জন্য প্রধান শিক্ষক ৩১/ ৭/ ২২ ইং তারিখ বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পাঁচটি শূন্য পদে জনবল নিয়োগ প্রদানের নামে ৭ জনের কাছ থেকে মোট ৭০ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন এম এ কাশেম। ৭ জনের মধ্যে ৫ জনের এমপিও ভুক্তি করা হয়েছে। বাকি দুই জন ইয়াছিন আলী ও তরিকুল নিয়োগ পাননি। নিয়োগ প্রদানের নামে তরিকুলের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ও ইয়াছিন আলীর কাছ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন।

তরিকুল ও ইয়াছিন আলী টাকা ফেরত চাইলে এম এ কাশেম টালবাহানা করে কালক্ষেপণ করেন । একপর্যায়ে তিনি তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দিতে থাকেন । এবিষয়ে সাতক্ষীরা আদালতে মামলা হয়,মামলা নং-২৩/২৩ ।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেম এর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)