সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে দু’পাশের সারি সারি মরা গাছ এখন মরণ ফাঁদ!
স্টাফ রিপোর্টার:
সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে দু’পাশের সারি সারি মরা গাছ মরণ ফাঁদে পরিণত করেছে। এই বুঝি গাছের শাখা-প্রশাখা ভেঙে গায়ে পড়ল- এমনই আতঙ্ক নিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষ। শুধু আতঙ্ক নয়, মরা এসব গাছের ডাল ভেঙে পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানির ঝুঁকিও।
সম্প্রতি এমনই এক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউপির মেল্লেকপাড়া গ্রামের আব্দুল খলিল হাজীর ছেলে ফারুক হোসেন।
পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় আশাশুনি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের কোমরপুরে একটি মরা শিশু গাছের (রেইন ট্রি) ডাল ভেঙে গায়ে পড়ে মারাত্মক আহত হন তিনি। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মোটরসাইকেলটিও।
সরেজমিন সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের মাইলের পর মাইল ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দু’ধারে সারি সারি মরা গাছের কঙ্কালসার দাঁড়িয়ে আছে। যা ক্রমেই ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে প্রকৃতির নিয়মে। আর ভয়টা সেখানেই। এসব মরা গাছের ডাল আকস্মিকভাবেই ভেঙে পড়ে সড়কের ওপর।
ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান শিমুল বলেন, ৩০ বছর আগে এ সড়কের দু’পাশে শিশু গাছ বা রেইনট্রি গাছ রোপণ করে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বছর খানেক আগে সড়কটির বেশকিছু স্থানে গাছগুলো শুকিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে শত শত গাছ মারা যায়। সামান্য ঝড় বৃষ্টিতেই গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। অনেক সময় সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহনে চলাচলকারী ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হন। দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের বলছি গাছগুলো অপসারণ করতে, কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ এখনো চোখে পড়েনি।
স্থানীয়রা জানান, গাছগুলোর বয়স অনেক। রোগ বা পোকার আক্রমণে গাছগুলোর মারা যাচ্ছে। ডাল ভেঙে পড়ে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। একটু বাতাস হলেই ডাল ভেঙে সড়কের ওপর পড়ে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দীন বলেন, গাছগুলো এখন মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সামাজিক বনবিভাগ জানায়, গাছগুলো মারা যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে পত্র দেওয়া হয়েছে। সেখানকার একটি টিম এসে কাঠ ও পোকার নমুনা নিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ‘লাখ্যা’ নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। রিপোর্ট এলে সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, গাছগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। এরইমধ্যে গাছগুলি মার্কিং করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে টেন্ডারের মাধ্যমে মরা গাছগুলি অপসারণ করা হবে।