রাতে বাঁশবাগানে স্ত্রীকে নির্যাতন, অপমানে প্রাণ দিলেন স্বামী
নিউজ ডেস্কঃ
মাস চারেক আগের ঘটনা। সংসারে অভাব দেখা দিলে দাদন ব্যবসায়ীর কাছে থেকে টাকা ধার নেন রিমা। কিন্তু দিনমজুর স্বামীর পক্ষে নিয়মিত সুদ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এই সময়ের মধ্যে সুদে আসলে আড়াই গুণ টাকা ঋণ হয়ে যায় রিমা ও তার স্বামীর। ফলে রিমাকে হতে হয় নৃশংস নির্যাতনের শিকার। রাতে বাঁশবাগানে আটকে রাখা হয় তাকে। এমনকি তাকে দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করিয়ে নেয়ার হুমকিও দেন দাদন ব্যবসায়ী। আর এই অপমানে নিজেকেই শেষ করে দেন তার স্বামী।
এমন ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পাররানীরপাড়া গ্রামে। রিমা বেগম ওই গ্রামের আব্দুল মালেকের স্ত্রী। স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
রোববার (৯ জুলাই) গাবতলী মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন দাদন ব্যবসায়ী একই গ্রামের গোলজার রহমানের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় রোববার দুপুরে গ্রেফতার হয়ে গোলজার এখন কারাগারে। তবে চিরদিনের জন্য স্বামীকে হারিয়েছেন রিমা। তার স্বামী আব্দুল মালেক আত্মহত্যা করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে,স্বর্ণালংকার ও ব্যাংকের ফাঁকা একটি চেকের পাতা বন্ধক রেখে গোলজারের কাছ থেকে সুদে ওপর ৩৬ হাজার টাকা নেন রিমা। চারমাসে সুদে আসলে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় লাখ টাকা। সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ঋণ বেড়ে যায়। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার গোলজার তার সহযোগীদের নিয়ে রিমাকে গ্রামের একটি বাঁশবাগানে তুলে নিয়ে আটকে রাখেন। সেখানে বৃহস্পতিবার রাত ২টা পর্যন্ত তাকে বিভিন্নভানে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে তাকে দিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে রাতেই গোলজারকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে রিমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন তার বাবা। তবে এসব ঘটনা সহ্য করতে পারছিলেন না রিমার স্বামী আব্দুল মালেক। অবশেষে শনিবার (৮ জুলাই) রাতে নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দেন তিনি। পরে রোববার (৯ জুলাই) তার মরদেহ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ।
গাবতলী মডেল থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, আব্দুল মালেকের আত্মহত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী মামলা করেন। সেই মামলায় গোলজারকে গ্রেফতার করা হয়।