মহাসাগরের তলদেশ থেকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে পাঁচযাত্রীসহ ‘অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে’ ধ্বংস হয়ে যায় টাইটান। এর প্রায় ১০ দিন পর মহাসাগরের তলদেশ থেকে ডুবোযান টাইটানের কয়েকটি টুকরো উদ্ধার করে আনা সম্ভব হয়েছে।
বুধবার টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে আনার ছবি প্রথম প্রকাশ করা হয় বলে জানায় দ্য ইনডিপেনডেন্ট।
পর্যটকদের টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গত ১৮ জুন আটলান্টিকে ডুব দেওয়া সাবমার্সিবল টাইটান সমুদ্রের তলদেশে কাছাকাছি পৌঁছানোর পর ‘অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে’ নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়। মারা যায় সেটিতে থাকা পাঁচ আরোহীর সবাই।
বুধবার প্রকাশিত নাটকীয় ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ক্রুরা টাইটানের কয়েকটি টুকরো হরিজোন আর্কটিক শিপ থেকে সেন্ট জোন্সের নিউফাউন্ডল্যান্ডে কানাডার কোস্ট গার্ড ঘাঁটিতে নামিয়ে নিচ্ছে।
কানাডীয় উপকূলে আটলান্টিকের প্রায় ১৩ হাজার ফুট গভীরে পানির নিয়ে ঐতিহাসিক জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পড়ে হয়েছে।
১০০ বছরেরও বেশি আগে সেই ১৯১২ সালে নিজের প্রথম সমুদ্র যাত্রাতেই ডুবে যায় ওই সময়ের সর্ববৃহৎ জাহাজ টাইটানিক। মারা যায় দেড় হাজারের বেশি যাত্রী ও ক্রু।
ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়া সেই টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পর্যটকদের দেখাতে নিয়ে যেত ওশানগেইট নামে একটি পর্যটন সংস্থা। এজন্য জনপ্রতি আড়াই লাখ ডলার গুণতে হতো।
ওশানগেইটের ডুবোযান ছিল টাইটান। গত ১৮ জুন ডুব দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর পানির উপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজের সঙ্গে সেটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তারপর থেকেই টাইটানের অনুসন্ধানে সমুদ্রের বিশাল এলাকা জুড়ে অনুসন্ধান চলছিল।
কী কারণে টাইটান বিধ্বস্ত হয়েছে তা অনুসন্ধানে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের যৌথ তদন্তদল।
টাইটান সাবমার্সিবলে আরোহী হিসেবে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানের এংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে (৭৭) এবং ওশানগেইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ (৬১)।
টাইটান হারিয়ে যাওয়ার পর সেটির অনুসন্ধানে সমুদ্রের তলদেশে প্রায় আড়াই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে সেটির অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হয়।
শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছেই টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় সাগরের তলদেশে পাঠানো একটি রিমোট অপারেটিং ভেহিকলও (আরওভি)।