এখনো নিখোঁজ সেই ডুবোজাহাজ, অবশিষ্ট আছে ৪০ ঘণ্টার অক্সিজেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে হারিয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সমুদ্রের নিচে পড়া থাকা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে যাওয়ার কথা ছিল ডুবোজাহাজটির।

তবে গত রোববার সমুদ্রে ডুব দেওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই এই জাহাজটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর রোববার, সোমবার এবং মঙ্গলবার পেরিয়ে বুধবার চলে আসলেও এখনো এটির কোনো সন্ধান মেলেনি।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশেনগেটের ডুবোজাহাজটিতে সাধারণত চারদিনের অক্সিজেন মজুদ থাকে। বর্তমানে এটিতে আর মাত্র ৩০ ঘণ্টার অক্সিজেন আছে।

এই সময়ের মধ্যে জাহাজটির সন্ধান পাওয়া না গেলে ভেতরে থাকা পাঁচ আরোহীর সবার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে সমুদ্র উদ্ধার অভিযান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন রে স্কট জানিয়েছেন, যদি উদ্ধারকারীরা সৌভাগ্যক্রমে ডুবোজাহাজটির সন্ধান পেয়েও যান, তা সত্ত্বেও এটি উদ্ধার করার বিষয়টি অনেক কঠিন হবে। কারণ পৃথিবীতে যেসব উদ্ধার সরঞ্জার রয়েছে, সেগুলোর সাগরের এত গভীরে যাওয়ার সক্ষমতা নেই।

জানা গেছে, নিখোঁজ ডুবোজাহাজটিতে পাঁচজন ছিলেন বলে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মধ্যে সাধারণ যাত্রী হিসেবে ছিলেন ৫৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ ধনকুবের হামিস হার্ডিং, ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯)।

অপরদিকে এটি পরিচালনা করছিলেন ৭৭ বছর বয়সী নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ডাইভার পল-হেনরি নারগোলেট। তিনি এর আগেও টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে গিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালে যখন প্রথম টাইটানিক অভিযান হয়েছিল সেটির সঙ্গেও যুক্ত  ছিলেন তিনি।

এছাড়া মর্মান্তিক এ ঘটনার সময় ডুবোজাহাজটির ভেতর ছিলেন ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী ৬১ বছর বয়সী স্টকটন রাস।

নিখোঁজ ডুবোজাহাজটি খুঁজে বের করতে ৭ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। যা যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট রাজ্যের আয়তনের চেয়েও বেশি।

রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি যান ডুবোজাহাজের সর্বশেষ অবস্থানে খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই যানটিতে একটি শক্তিশালী ক্যামেরা লাগানো আছে।

এছাড়া ডুবোজাহাজটি খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বিমান, সরঞ্জাম এবং উদ্ধার অভিযানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে এসেছে। এছাড়া উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে ফ্রান্সের একটি গবেষণা জাহাজ।

এদিকে ডুবোজাহাজের আরোহীরা কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশ থেকে একটি বড় জাহাজে করে তাদের যাত্রা শুরু করেন। এরপর প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে টাইটানিক জাহাজটির কাছে আসেন। সেখানেই ওই ডুবোজাহাজটিতে ওঠে সমুদ্রের নিচে ডুব দেন। এরপরই নিখোঁজ হয়ে যান তারা।

সূত্র: বিবিসি

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)