ঈদকে সামনে রেখে এখনও জমেনি দেবহাটার কুরবানির পশুহাট
মোমিনুর রহমান:
কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভাব-গাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়ে আগামী ২৮ জুন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পশু কোরবানি করবেন সারাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মত সাতক্ষীরার পারুলিয়া পশুরহাটে ব্যাপক গরু-ছাগল কেনাবেচা হয় প্রতিবছর। সপ্তাহের রবিবার এখানে হাট বসে। কিন্তু এবছর গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খরচের তুলনায় দাম না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন খামারিরা। তাছাড়া সাম্প্রতিক লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক গবাদীপশু মারা গেছে এতে অনেকটাই সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পারুলিয়া পশুরহাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় চড়াও দাম হাকাচ্ছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে বড় গরু না থাকলেও ছোট ও মাঝারি গরুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এবছর অধিকাংশ মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু কোরবানিতে। অন্যদিকে গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বছর জুড়ে গরু পালন এবং পরিচর্চায় খরচ বেশি হওয়া স্বত্বেও কাঙ্খিত দামের না পেয়ে কম দামে গরু বিক্রি করছেন অনেকে। ঈদের আগমূহুর্তে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আমদানী না হলে কিছুটা ক্ষতি পোষাতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন খামারীরা।
এদিকে রবিবার সরেজমিনে পারুলিয়া পশুহাটে গিয়ে অন্যান্য বারের মতো বিশালাকৃতির সারি সারি গরুর দেখা মেলেনি। হাতে গোনা ২ থেকে ৩টি বড় সাইজের গরু হাটে তুললেও, ঘন্টার পর ঘন্টা রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থেকে ক্রেতা তেমন কোন ক্রেতা মেলেনি। তবে হাটে ৪৫ থেকে ৮৫ হাজার টাকা মূল্যেও গরুর চাহিদা লক্ষ করা গেছে। পাশাপাশি ৪ থেকে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ছাগল বেচাকেনা হয়েছে।
হাটে সবচেয়ে বড় সাইজের গরু বিক্রি করতে আসা গয়েশপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তার গরু ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন। কিন্তু ক্রেতারা ২ লাখের নিচে দাম বলছেন। তবে ২ লাখ বা তার একটু বেশি হলেই তিনি গরুটি বিক্রি করে বাড়িতে ফিরবেন। খরচের তুলনায় দাম না পেয়ে রীতিমত তিনি হতাশার কথা জানিয়েছেন। তাছাড়া গরু বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে এত টাকার গরু বিক্রি না হওয়ার কথা জানান তিনি।
অপরদিকে টাউনশ্রীপুরের আব্দুল্লাহ ২টি ছাগল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছেন। কিন্তু তিনি ১ লাখের কাছাকাছি ক্রেতা পেলেই বিক্রি করবেন বলে জানান।
অন্যদিকে, ভোমরার ওলিউল্লাহ জানান, ৩৫ হাজার টাকা দাম চেয়ে ২৭ হাজার ৫শত টাকায় ছাগল বিক্রি করেছেন তিনি।
নুপুর বেগম নামের এক নারী জানান, সংসারের অভাব মেটাতে ছাগল পালন করেন তিনি। কিন্তু ঈদ হাটে বেশি দামের আশায় এসে হয়েছেন নিরাশা। কারন ৯ হাজার টাকা দাম চাওয়া ছাগল ৭ হাজার হলে ছেড়ে দিতে চাইলেও ক্রেতা মিলছে না বলে জানান তিনি।
পারুলিয়া পশুহাটের ইজারা গ্রহীতা আল ফেরদাউস আলফার প্রতিনিধি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন হিরা জানান, ঈদের আগে ২/৩ টি হাট খুবই জমজমাট হয়। কিন্তু এবছর কাঙ্খিত হারে পশু কেনাবেচা না থাকায় চরম লোকসানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।