কলারোয়ায় ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রোলে আগুন নিক্ষেপের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ কাদের নিহত

কলারোয়া প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কলারোয়ার চন্দনপুর গ্রামে ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রল আগুন নিক্ষেপের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল কাদের  নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নিহত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শারমিন খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত আব্দুল কাদের সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে।
চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ডালিম হোসেন বলেন, ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল আগুন নিক্ষেপের ঘটনায়  আশাঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রীর শারমিন সহ তাদের শিশু কন্যা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আব্দুল কাদের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শারমিন খাতুনের অবস্থা আশাঙ্কাজনক। শারমিনের শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে গেছে। তার বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা খুব কম রয়েছে বলে জানিয়েছে ডাক্তার।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পেট্রোল আগুনে দগ্ধ হওয়া আব্দুল কাদের ঢাকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বিষয়টি শুনেছি। পেট্রোল আগুন নিক্ষেপের ঘটনায় আব্দুল কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন (সবুজের স্ত্রী)  বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবুজের সহযোগী সোহাগকে আটক করা হয় পরবর্তীতে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি সবুজকে আটকের জন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ।
এরআগে, গত রোববার (২৮ মে) মধ্য রাতে কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল আগুন নিক্ষেপ করেন তার ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন।
অভিযুক্ত ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর পোড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি পেশায় আফিল জুট মিলের শ্রমিক।
ঘটনার দিন চন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে কাদের হোসেনের ঘরের দরজায় বাইরে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন দিয়েছে তার ভগ্নিপতি সবুজ। ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে দগ্ধ হলেও দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তাদের চিৎকারে আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিবেশিরা উঠে এসে জানালার রড ও তালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে। সে সময় আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত ও দগ্ধ  হয় কাদের হোসেন , তার স্ত্রী শারমিন ও কন্যা ফাতেমা। পরবর্তীতে তাদেরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশংকাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও জানান, বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোকে কেন্দ্র করে কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী বেনাপোলের সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিলো। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকিও দিত সবুজ। বিষয়টি কাদের অতিসম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে একটি শালিস-বৈঠকের কথা ছিলো।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দিন আব্দুল কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন জানান, তার স্বামী সবুজ তাকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করে। একারণে সে স্বামীর ঘর করতে চায় না। এসব নিয়ে তাদের ঝামেলা চলছিলো।  তার স্বামী সবুজ তার ভাই কাদেরকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আমার ভাইয়ের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামী সবুজ  জঘন্যতম এই কাজ করেছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)