ইউরোপার রেকর্ড সপ্তম শিরোপা জিতল সেভিয়া

অনলাইন ডেস্ক:

প্রথমার্ধের গোলে শুরুতে এগিয়ে ছিল এএস রোমা। এরপর আত্মঘাতী গোলের কল্যাণে সমতায় ফেরে সেভিয়া। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়ের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়েও শ্রেষ্ঠত্বের মীমাংসা করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেই লড়াইয়ের জয়ে ইউরোপা লিগে রেকর্ড ৭ম শিরোপা জিতল স্প্যানিশ ক্লাবটি।

বুধবার (৩১ মে) রাতে হাঙ্গেরির পুসকাস অ্যারেনায় শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচ সমতায় থাকে ১-১ গোলে। ফলে শেষ পর্যন্ত সেভিয়া ও এএস রোমার ইউরোপা লিগের ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-১ গোলের জয়ে সাতবার ফাইনাল খেলে প্রতিবারই জিতল সেভিয়া।

এর আগে উয়েফা কনফারেনস লিগের শিরোপা জিতে রোমার ১৪ বছরের শিরোপা খরা দূর করেন জোসে মরিনিও। এবার উন্নতির ধারা অব্যাহত রেখে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের পতাকাও সমুন্নত রেখে ইউরোপের শিরোপা জেতার সুযোগ ছিল তার সামনে। কিন্তু নিজের ৬ষ্ঠ ইউরোপিয়ান শিরোপাটি জিততে পারেননি এই পর্তুগিজ কোচ। সেভিয়ার কাছে শেষ পর্যন্ত হারতে হলো তাকে।

এদিন শিরোপা লড়াইয়ে রোমার শুরুটা ছিল দারুণ। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই সেভিয়াকে চাপে রাখার চেষ্টা করে তারা। তার কারণে সেভিয়া যখন থিতু হতে সংগ্রাম করছিল, ততক্ষণে একাধিকবার গোলের লক্ষ্যে তাদের রক্ষণে হামলা চালায় রোমা। ১১ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর আনমার্ক লিওনার্দো স্পিনাৎসোলার শট ঠেকিয়ে সে যাত্রায় বাঁচান সেভিয়া গোলরক্ষক।

এরপরও আক্রমণে সেভিয়াকে বেশ চাপে রাখে রোমা। নিজেদের রক্ষণকে দৃঢ় রেখেই মূলত প্রতি-আক্রমণে জোর দিচ্ছিল তারা। রোমার জমাট রক্ষণ ও নিজেদের এলোমেলো ফুটবলের কারণে সেভিয়া তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারছিল না। ম্যাচের প্রথম আধাঘণ্টায় সেভিয়া গোল দূরে থাক, গোলের জন্য কোনো শটই নিতে পারেনি।

৩২ মিনিটে পাওলো দিবালার গোলে নিজেদের প্রাপ্য লিড পেয়েই যায় রোমা। গিয়ানলুকা মানচিনির দারুণ এক পাস থেকে বল পেয়ে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের ফাঁদ এড়িয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে অসাধারণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই আর্জেন্টাইন। এই গোলের সঙ্গে পুরো গ্যালারি যেন উল্লাসে ফেটে পড়ে উৎসবে মেতে ওঠে রোমা সমর্থকরা।

পিছিয়ে পড়ে সেভিয়াও চেষ্টা করে সমতা ফেরানোর। গোলের পর খেলা অনেকটা উন্মুক্ত হয়ে যায়। তবুও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি সেভিয়া। বিরতির ঠিক আগে যোগ করা সময়ে ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে শট নেন ইভান রাকিতিচ। কিন্তু তার শট ফিরে আসে পোস্টে প্রতিহত হয়ে। অল্পের জন্য সমতা ফেরাতে না পেরে হতাশা নিয়ে বিরতিতে যায় সেভিয়া।

বিরতির পর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে সেভিয়া। এর মাঝে সেভিয়া দুই একবার কাছাকাছি গিয়েও গোলের দেখা পায়নি। তবে ভাগ্যের জোরে সমতায় ফিরতে বেশি সময় লাগেনি। রোমা ডিফেন্সের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করে ঠিকই গোল করেছে তারা। জেসুস নাভাসের ক্রসে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়ান মানচিনি।

৬২ মিনিটে রোমার আক্রমণ আশ্চর্যজনকভাবে ঠেকিয়ে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো। তবে ৭৬ মিনিটে রোমা ডি-বক্সের ভেতর সেভিয়ার এক খেলোয়াড় ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় সেভিয়া। পরে অবশ্য ভিএআরের সাহায্যে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রেফারি। ফলে সেই যাত্রায় বেঁচে যায় রোমা।

শেষ দিকে অবশ্য দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা করে। কিন্তু কেউ আর গোল পায়নি। ফলে ম্যাচ চলে যায় অতরিক্তি করা সময়ে। এই সময়েও দুই দল মরিয়া হয়ে গোলের চেষ্টা করেও কেউ কারও রক্ষণবাধা পেরোতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত লড়াই যায় টাইব্রেকারে। যেখানে বাজিমাত করে সেভিয়া। রোমাকে কাঁদিয়ে তারা জিতে নেয় শিরোপা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)