দুই দশক ধরে তুরস্কের রাজনীতিতে এরদোয়ানের আধিপত্য

অনলাইন ডেস্ক:

টানা তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ভোটে তুরস্কের জনগণ তার ওপরই আস্থা রাখেন। সর্বশেষ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে আগামী পাঁচ বছরও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করা দেশটির নেতৃত্ব দেবেন তিনি।

এরদোয়ানের উঠে আসা রক্ষণশীল রাজনৈতিক শিবির থেকে। গত শতকের বিশের দশকে মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের হাত ধরে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে আধুনিক তুরস্কের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরদোয়ান সেই দেশে অনেকটা বিভাজন সৃষ্টিকারী নেতার ভাবমূর্তি নিয়ে এগোতে থাকেন ।

পাঁচ বছর আগেই আতাতুর্কের ১৫ বছর দেশ শাসনের মেয়াদ পার করে এরদোয়ান হয়ে ওঠেন তুরস্কের সবচেয়ে বেশি সময়ের শাসক। ২০১৭ সালে গণভোট করে প্রেসিডেন্টের হাতে সর্বময় ক্ষমতা নিয়ে নেন তিনি।

রাজনীতিতে এরদোয়ানের উঠে আসা গত শতকের সত্তরের দশকে ইস্তাম্বুলের বেইওগ্লু অঞ্চল থেকে। তার শৈশব কেটেছে শ্রমজীবী মানুষ অধ্যুষিত ওই অঞ্চলের কাসিমপাসা এলাকায়। ১৯৭৬ সালে এরদোয়ান প্রথম ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টির যুব শাখার বেইওগ্লু অঞ্চলের প্রধান নির্বাচিত হন। ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টির প্রধান ছিলেন নাজিমুদ্দিন এরবাকান। তিনি পরে ১৯৯৬–৯৭ মেয়াদে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নাজিমুদ্দিন এরবাকানকে এরদোয়ানের রাজনৈতিক গুরু হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

এরদোয়ান ১৯৯৪ সালে প্রথম ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন । সে সময় দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ইস্তাম্বুলে দেখা দেওয়া বিভিন্ন সংকট যেমন বায়ুদূষণ, বর্জ্য সংগ্রহ এবং বিশুদ্ধ পানির ঘাটতির মতো সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হন তিনি। অবশ্য চার বছরের মাথায় একটি কবিতা আবৃত্তির জন্য আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় তাকে। এর মধ্য দিয়ে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে চার মাসের কারাদণ্ড হয় এরদোয়ানের।

১৯৯৯ সালে কারাগার থেকে বেরোনোর পরও এরদোয়ানের রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে। এর দুই বছর পর জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (এ কে পার্টি) গড়ে তোলেন তিনি। এর ১৫ মাস পর ২০০২ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয় তার এ কে পার্টি। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জনমনে সৃষ্ট ক্ষোভের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই নির্বাচন। দল সরকার গঠন করলেও রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পরের বছর মার্চ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদে বসতে পারেননি এরদোয়ান। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তুরস্কের রাজনীতিতে এরদোয়ানের আধিপত্যের পর্ব শুরু হয়। সূত্র: আল জাজিরা

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)