মালয়েশিয়া প্রবাসীদের জন্য চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম
অনলাইন ডেস্ক:
চলতি সালের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ মে) দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রায় ১,২৫,০০০ টি পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করে, যার মধ্যে প্রায় ৯৩,৮৯৫ টি পাসপোর্টের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫২,০০০ এর অধিক পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হয়েছে এবং প্রায় ২৫,০০০ পাসপোর্ট ঢাকাস্থ ডি আই পি তে প্রিন্টিং এর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। নির্ভুল পাসপোর্ট আবেদনসমুহ সময়ক্ষেপণ ব্যতিরিকে প্রক্রিয়া করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াগত জটিলতায় ঢাকায় পাসপোর্ট প্রিন্টিং ২৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকায় পথিমধ্যে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়। তবে, হাইকমিশনের সক্রিয় প্রচেষ্টায় এই জটিলতা নিরসন সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এম. আর. পি সিস্টেম পুরাতন হবার কারনে মাঝে মাঝে সার্ভার সমস্যায় পাসপোর্ট প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, তাই চলতি বিছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরুর ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। কোন বাংলাদেশি নাগরিক যাতে মালয়েশিয়া সরকারের চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ার সুবিধা লাভে বঞ্চিত না হয় হাই কমিশন সে ব্যাপারে সচেতন রয়েছে। সেই সাথে দালাল এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দোরাত্ম্য থেকে অসহায় প্রবাসীদের রক্ষার্থে হাই কমিশন বদ্ধ পরিকর। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ ত্বরান্বিত করার ব্যপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশী নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রমের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়। গত ২৬ মে ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ১০,৩৪৯ টি ডিমান্ডের বিপরীতে ৪,২৭,৭৭৯ জন নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদন মালয়েশিয়া সরকার অনুমোদন প্রদান করেছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় দুই লক্ষাধিক জন নতুন কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে পৌছেছে বাকি প্রায় ২,২৫,০০০ নতুন কর্মীর আগমন প্রক্রিয়াধীন আছে।
এদিকে কিছু কিছু কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়ার ঘটনা হাই কমিশনের নজরে এসেছে। এ ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডিমান্ড অনুমোদন প্রক্রিয়ার দূর্বলতা ও কিছু কিছু এজেন্সির গাফিলতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ায় এসে কাজ না পাওয়া ভাগ্যবিড়ম্বিত কর্মীর সংখ্যা মোট আগত কর্মীর তুলনায় খুবই নগন্য এবং এটি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনযোগ্য সীমার মধ্যে রয়েছে। এই সকল বাংলাদেশী কর্মীদের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা, মালয়েশিয়া সরকারী দপ্তর এবং নিয়োগকারী এজেন্ট এর সাথে বাংলাদেশ হাই কমিশন নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে যাতে করে বৈধভাবে আগত একজন বাংলাদেশী কর্মীও মালয়েশিয়াতে বিড়ম্বনার শিকার না হয়। তবে এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার ডিমান্ড অনুমোদনকারি কর্তৃপক্ষ ও উভয় দেশের সংস্লিস্ট এজেন্সি সমুহকে আরও দায়িত্বশীল হবার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ইদানীং পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, বিপুল পরিমান পাসপোর্ট প্রদান ও লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মীর কর্মসংস্থানের কার্যক্রম পরিচালনায় হাই কমিশনের কঠোর স্বচ্ছতার নীতির কারণে কিছু কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পূর্বের ন্যায় অতি সহজে সাধারণ প্রবাসী কর্মীদের ঠকিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারছে না। তাই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ প্রবাসী ও বাংলাদেশে তাদের আত্নীয়-পরিজন বা শুভানুধ্যায়ীদের বিভ্রান্ত করে বাংলাদেশ হাই কমিশন তথা বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু হাইকমিশন সীমিত সম্পদ এবং লোকবল নিয়ে সকলের সহযোগিতায় মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণমূলক কাজ অব্যাহত রেখেছে। মালয়েশিয়ায় প্রায় এক মিলিয়নের অধিক প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই-ভাই-বোন এবং বিশেষ করে খেটে খাওয়া সাধারণ কর্মী ভাইদের স্বার্থ সংরক্ষণে স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ হাই কমিশন বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ হাই কমিশন সকল প্রকার মিথ্যা ও অপপ্রচার ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিয়ে সত্য ও সুন্দরের চর্চার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করছে।