সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেল আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা
অনলাইন ডেস্ক:
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও শক্তিশালী হয়ে কক্সবাজারের দিকে এগিয়ে আসছে। এ কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সেন্টমার্টিন থেকে তিন হাজারেরও বেশি লোক নিজস্ব উদ্যোগে ট্রলারে করে টেকনাফে চলে এসেছে। আর যারা স্থানীয় দ্বীপবাসি রয়েছে তাদের স্থানীয় হোটেল রিসোর্ট এবং নৌবাহিনীর কোস্ট গার্ডের স্থাপনায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ প্রস্তুতি সভায় ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি এবং জানমাল রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে আজ শনিবার (১৩ মে) ও আগামীকাল রোববার (১৪ মে) দুদিন বিমান ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নামতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া পেকুয়া মহেশখালী টেকনাফ এবং সদর এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দারা সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে উপকূল এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। নৌবাহিনী কোস্ট গার্ড রেড ক্রিসেন্টসহ উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে মাইকিং করছে। কক্সবাজার জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা যেহেতু কক্সবাজারমুখী, সেহেতু কক্সবাজারসহ সেন্টমার্টিন দ্বীপ একটু ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্যই সেন্টমার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় মোখার বিপদ সংকেত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে আট হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৯টি মেডিকেল টিম। দেড়শ মেট্রিক টন চাল, ছয় দশমিক ৯ মেট্রিক টন শুকনো খাবার, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন, ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ১৯ হাজার নগদ টাকা মজুদ করা হয়েছে।
কক্সবাজারের উপকূল এলাকা বিশেষ করে কুতুবদিয়া ধলঘাটা মাতারবাড়ী দ্বীপে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে। এ অঞ্চলের বাসিন্দারা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের গোসল করতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ ব্যাপারে সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ডের কর্মীদের সার্বক্ষণিক নজরদারি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম বলেন, ‘সৈকতে আগত পর্যটকদের পানিতে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি সৈকতে পর্যটকদের সব সেবা আপাতত বন্ধ থাকবে।’
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন বলেন, ‘কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি শরণার্থী ক্যাম্প রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।’
কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান আবদুর রহমান জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আগামী এক সপ্তাহ সাগর উত্তাল থাকবে।