জামিন পেলেন ইমরান খান
অনলাইন ডেস্ক:
আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দুই সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। আজ শুক্রবার (১২ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) একটি ডিভিশনাল বেঞ্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দুই সপ্তাহের জমা দেয়। এর আগে, গতকাল আইএইচসি প্রাঙ্গণ থেকে ইমরানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ ও বেআইনি বলে জানিয়েছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। খবর দ্য ডনের।
ইমরানের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়েছে আইএইচসির দুই নম্বর কক্ষে। এতে বিচারক হিসেবে
ছিলেন মিয়াগুল হাসান আওরঙ্গজেব ও সামান রিাফাত ইতিয়াজ। এই রায়ের ফলে আল-কাদির মামলায় ইমরানের মুক্তিতে কোনো বাধা নেই।
এদিকে, পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে কতটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে, সেই বিষয়ে জানতে চারটি আবেদন করেছে ইমরানের আইনজীবীরা।
এর আগে দুপুরের দিকে আইএইচসিতে ইমরানের জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। তবে, নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা পরে শুনানি শুরু হয়। খানিক সময় বাদেই জুমার নামাজের শুনানি স্থগিত করা হয়। এ সময় পিটিআই সমর্থকরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে, দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে ফের শুনানি শুরু হয়। এ সময় ইমরান খান ও তার আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ইমরানের পক্ষ থেকে খাজা হারিস যুক্তিতর্ক স্থাপন করে।
শুনানি খাজা হারিস আদলতকে বলেন, ‘জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরোর (এনএবি) নেওয়া পদক্ষেপ বেআইনি। আনুষ্ঠানিক তদন্তের পর সংস্থাটি শুধু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে। পিটিআই নেতা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, তার বিরুদ্ধে এনএবি তদন্ত করছে। গ্রেপ্তারের দিন এনএবির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আবেদন করতেই আদালতে গিয়েছিলেন ইমরান খান। তবে, তার আগেই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শুনানির একপর্যায়ে বিচারক পিটিশনকারীকে জিজ্ঞাসা করেন, তাকে যদি একগুচ্ছ প্রশ্ন দেওয়া হয়, তাহলে তিনি উত্তর দেবেন কিনা। জবাবে নেতিবাচক উত্তর দেন ইমরানের আইনজীবী হারিস। তিনি বলেন, ‘ইমরানকে হাজির হতে বললে, তিনি সশরীরে হাজির না হয়ে লিখিত জবাব দেন।’ এই আইনজীবী বলেন, ‘নজদারি সংস্থা এনএবি বর্তমানে প্রভাবিত।’
এরপরে বিচারকরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর করেন ও এনএবির আইনজীবী ও পিটিআই প্রধানের আইনজীবী পরবর্তী শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। পরবর্তীতে শুনানিতে নির্ধারিত হবে, ইমরানের জামিন বাতিল করা হবে, নাকি মেয়াদ বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে ৯ মে’র হওয়া কোনো মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দিয়েছে ওই ডিভিশনাল বেঞ্চ।
গত ৯ মে এনএবির হাতে গ্রেপ্তার হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান। পরে, তার আইনজীবীরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করলে গতকাল দেশটির সর্বোচ্চ আদালত এই গ্রেপ্তারকে অবৈধ বলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে তাকে দ্রুত মুক্তির নির্দেশ দেন আদালত।
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশটির বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি পিটিআই কর্মীসমর্থককে। এ সময় পিটিআই সমর্থকরা দেশটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ও সেখানকার কিছু ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে সরকার দেশের চারটি প্রদেশের দুটিতে অফিস আদালত ও স্কুল বন্ধ করে দেয়। এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব সেবা ব্লক করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল-টেলিফোন নেটওয়ার্ক।