দেবহাটায় মারপিটের শালিসে বাদীপক্ষকে খুর মারলো প্রতিপক্ষ, গ্রেপ্তার-৩

মোমিনুর রহমান, দেবহাটা:

সাতক্ষীরার দেবহাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ কেন্দ্রিক মারপিটের শালিস বৈঠক চলাকালে বাদীপক্ষের ওপর ফের হামলাসহ তিনজনকে খুর মেরে রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শনিবার (৬ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার সখিপুরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের ধারালো খুরের আঘাতে বাদী পক্ষের লোকজনদের মধ্যে দক্ষিণ সখিপুরের নূর আহম্মদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৬) ও দুই ভাতিজা ইয়াছিন আলী (৪০) এবং আশরাফুল ইসলাম (৩২) গুরুতর জখম হয়।

তাছাড়া প্রতিপক্ষের এলোপাতাড়ি মারপিটে আহতও হন বাদী পক্ষের বেশ কয়েকজন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে চলমান ওই শালিস বৈঠকটি পন্ড হয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

এঘটনায় আহতদের পক্ষে নূর আহম্মদের অপর ছেলে ইসরাফিল সরদার বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দেবহাটা থানায় মামলা (নং-০৫) দায়ের করলে রাতেই অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দক্ষিণ সখিপুর গ্রামের শফিকুল সরদারের ছেলে মোস্তাকিন বিল্লাহ সরদার (২৫), রফিকুল ড্রাইভারের ছেলে হযরত আলী (৩০) ও পিয়ার আলীর ছেলে আমিরুল গাজী (৩৮)। গ্রেপ্তারকৃতদের রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিতসহ মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্যাহ।

মামলার বাদি ইসরাফিল সরদার জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ২৭ এপ্রিল তার প্রতিবেশী চাচা আব্দুর রহমানকে মারপিট করে পার্শ্ববর্তী শফিকুল সরদারের ছেলে মোস্তাকিন বিল্লাহসহ প্রতিপক্ষের লোকজন। শনিবার বিকেলে দুপক্ষকে নিয়ে সখিপুর আলিম মাদরাসায় শালিস বৈঠকে বসেন ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। শালিসে একাধিক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা ঘনাতেই দুপক্ষের বাকবিতন্ডতায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শালিস বৈঠক। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি ও মারপিট। ধস্তাধস্তি ও মারপিটের মাঝেই তাদের কয়েকজনকে ধারালো খুর দিয়ে পোচ দেয় প্রতিপক্ষরা। পরে গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি।

এব্যাপারে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বাদি ও বিবাদী উভয়পক্ষের সিদ্ধান্তে আলিম মাদরাসায় শালিস বৈঠকটি বসানো হয়েছিল। কিন্তু শালিসে আলোচনার মাঝেই এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে। এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘটনায় জড়িত সকলের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদে শালিস বৈঠকের নিরাপদ ও নির্ধারিত স্থান থাকা স্বত্ত্বেও বিশেষ করে রাতের বেলা অনিরাপদ স্থানে শালিস বৈঠকের আয়োজন এবং তা থেকে এমন অনাকাঙ্খিত ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা ও দায়িত্ববোধে রীতিমতো ক্ষুদ্ধ উপজেলার সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)