মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মডেল ভিলেজ, পাবেন ঘর ও কৃষিজমি

নিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সেদেশে মডেল ভিলেজ হয়েছে। সেখানে তাদের একটি করে ঘর, কৃষি কাজের জন্য জমি, সার ও বীজ দেওয়া হবে।

মিয়ানমারের মংডো টাউনশিপ প্রশাসকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর অংশ হিসেবে শুক্রবার বাংলাদেশ থেকে রাখাইন রাজ্য পর্যবেক্ষণে যায় ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ঘুরে এসে এ তথ্য জানালো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।।

শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফের ট্রানজিট জেটি ঘাট দিয়ে প্রতিনিধি দল মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ দিনই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একই পথে টেকনাফে ফিরে এসেছেন তারা।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে তিন নারীসহ ২০ জন রোহিঙ্গা, ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা ও একজন অনুবাদক ছিলেন।

রাখাইনে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের প্রধান মোহাম্মদ ছলিম বলেন, রাখাইনে ১৫টি গ্রাম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলকে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক কী পরিমাণ অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, তা দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে তারা প্রত্যাবাসনের আগে নাগরিকত্ব না দিয়ে এনবিসি কার্ড (অতিথি কার্ড) দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেতে চায়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেখানে যাওয়ার ছয় মাস পর নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর উত্তরে আমরা বলেছি, আগে নাগরিকত্ব দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে।

প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১৫টি গ্রাম ঘুরে দেখেছেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের জেটি থেকে রওনা দেওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি নাফ নদ অতিক্রম করে রাখাইন রাজ্যের নাকফুরা খালের জেটিতে পৌঁছায়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে নাকফুরা ঘাটে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্যদের স্বাগত জানান সেখানকার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা।

নাকফুরা ঘাটে পৌঁছার পর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের গাড়িতে তুলে পাশের গ্রাম বলিবাজারে নেয়া হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নাকফুরা, বলিবাজার, থায়াংখালী ও ঝিমংখালী গ্রাম ঘুরিয়ে সড়কপথে নেয়া হয় মংডু শহরে।

দুপুর দেড়টার দিকে মংডু ট্রানজিট ক্যাম্পে দুপুরের খাওয়া শেষে দুই দেশের মধ্যে প্রত্যাবাসন ও যাচাই করা প্রত্যাবর্তনকারীর ব্যবস্থা-সম্পর্কিত বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইমিগ্রেশন দলের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়।

এরপর মংডুর পাশের গ্রাম কাহারীপাড়া, নুরুল্যাপাড়া, সিকদারপাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রাম দেখানো হয়।

একইসঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মংডুতে নির্মিত ট্রানজিট কেন্দ্রসহ নানা অবকাঠামোও ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।

বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মংডু ট্রানজিট ঘাট থেকে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা স্পিডবোটে চড়ে সোয়া ৫টায় টেকনাফে পৌঁছান।

গত ১৫ মার্চ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে মিয়ানমারের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল টেকনাফ এসে ১৭৭টি পরিবারের ৪৮০ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই করেছিল। ঐ তালিকা থেকেই ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)