বিএনপি থেকে খালেদার পদত্যাগ চায় তারেক অনুসারীরা
নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বিএনপিপন্থী চিকিৎসক ছড়া কারো সঙ্গে তাকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর এ নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে।
এমনকি খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং তার বোন সেলিনা ইসলাম পর্যন্ত মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে নোংরা রাজনীতির খেলা খেলছে বিএনপি নেতারা। হঠাৎ করেই ঈদের পর খালেদা জিয়াকে কেন হাসপাতালে নেয়া হলো এবং তাকে কেন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, এই বিষয়টিও শামিম ইস্কান্দার অবহিত নয়।
একাধিক সূত্র বলছে, বর্তমানে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করানোর জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার নির্দেশেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার যেন বিএনপিতে কোন পদ-পদবি না থাকে, সে ব্যাপারে বিএনপি নিশ্চিত হতে চাইছে। খালেদা জিয়া যদি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন এবং বিএনপির কোন পদে না থাকেন, তাহলে দলকে নির্বাচনে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও সেটি দলীয় সিদ্ধান্ত হবে না।
তবে বর্তমানে খালেদা জিয়া কাগজে-কলমে দলের চেয়ারপার্সন। তাই খালেদা জিয়া যদি বলেন, দলকে নির্বাচনে যেতে হবে। তাহলে সেটি বিএনপির জন্য আদেশ হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারপার্সনের হাতে সর্বক্ষমতা। দলের গঠনতন্ত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে কোনো পদ নেই এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেও কোনো পদ নেই। তারেক জিয়া এ দুইটি পদের বলে বিএনপিকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করছেন। আর একারণেই এখন তারেক জিয়া মরিয়া হয়ে উঠেছেন তার মাকে বিএনপি থেকে মাইনাস করার জন্য। আর এ কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার পদত্যাগের ব্যাপারে বিএনপি অন্য নাটক মঞ্চস্থ করছে। বিএনপি বলছে, সরকার যেহেতু মনে করছে যে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন এবং চেয়ারপারসন হওয়ার কারণে সরকার তাকে বিদেশে নেয়ার ক্ষেত্রে ভয় পাচ্ছে, আতঙ্ক বোধ করছে। এজন্য বেগম খালেদা জিয়া স্বইচ্ছায় সজ্ঞানে দলের সব ধরণের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন, ফলে তিনি বিএনপি’র কেউ থাকবেন না। তখন একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে মানবিক কারণে সরকার তাকে বিদেশে পাঠাতে আগ্রহী হবে।
তবে বাস্তবতা হলো খালেদা জিয়া পদত্যাগ করুক আর নাই করুক না কেন তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতির বিষয়টি সংঘটিত হয়েছিল। কাজেই তিনি একদিকে যেমন এর দায় এড়াতে পারেন না, অন্যদিকে এখন তিনি দল থেকে পদত্যাগ করলেও তার পরিস্থিতির কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। বরং খালেদা জিয়াকে ব্যবহার করে তাকে দিয়ে কোনো মুচলেকা নিলে তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া যেন বিএনপির ওপর না পড়ে সেটি নিশ্চিত করতে চাইছে বিএনপি। আর একারণেই খালেদা জিয়াকে পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে।