হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে পল্লী বিদ্যুতের চিঠি
অনলাইন ডেস্ক:
ময়মনসিংহে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য সরকারি দফতর, কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, লো ভোল্টেজজনিত সমস্যার কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। এ কারণে তীব্র গরমে লোডশেডিং দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ সদর (আংশিক), গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, তারাকান্দা, ফুলপুর, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলায় চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অত্যন্ত কম। অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তীব্র গরমে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। সেচ কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আঞ্চলিক দফতর ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। কোনো হামলার ঘটনা ঘটলে নির্দিষ্ট এলাকায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। এ কারণে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখনও কোথাও হামলা হয়নি। তবে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র, স্থাপনাসমূহ এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জান মালের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে পরবর্তী ঝামেলা এড়াতে পুলিশ প্রশাসনকে আগেভাগেই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠি প্রাপ্তি প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা জানান, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে কেউ যেন নাশকতা বা ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের অধীনে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পাওয়ার গ্রিড অব কোম্পানি পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিতরণ করে। ময়মনসিংহ, জামালপুর ও টাঙ্গাইলে সাতটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র রয়েছে।
স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস ও জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ার ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড অব কোম্পানি (পিজিসিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল হকের ভাষ্য, বর্তমানে ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। শিডিউলের মাধ্যমে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাতদিন মিলে গড়ে ময়মনসিংহে ২০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। পিডিবির কিছু বিদ্যুৎ পল্লী বিদ্যুৎকে দেওয়া হচ্ছে। সরকার পরিস্থিতি উত্তরণে চেষ্টা করছে এবং গরমের তীব্রতা কমে গেলে ও সেচ মৌসুম শেষে এই সমস্যা কেটে যাবে।