নিলাম কেন্দ্রের অপেক্ষায় পঞ্চগড়ের চা চাষিরা
অনলাইন ডেস্ক:
দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিস্তীর্ণ সমতল ভূমিতে গড়ে ওঠা চা বাগানগুলোতে বিছানো হয়েছে চায়ের সবুজ পাতার গালিচা। বাগানজুড়ে কচি সবুজ চাপাতা সংগ্রহের ধুম পড়েছে।
দেশের অঞ্চলভিত্তিক চা উৎপাদনে পঞ্চগড়ের অবস্থান দ্বিতীয় হলেও নিলাম কেন্দ্র না থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত চায়ের প্রতিযোগিতামূলক দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদিও পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড বলছে, শিগগিরই পঞ্চগড়ে চায়ের নিলাম কেন্দ্র চালু হবে।
২০০০ সালে ৪৫৪ একর পতিত সমতল ভূমিতে চা চাষের মধ্য দিয়ে দেশের তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে পঞ্চগড়ে চা চাষের সূচনা হয়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় চা চাষ লাভজনক হওয়ায় গত ২২ বছরে সেই পরিধি বেড়ে এখন ১২ হাজার ৭৯ একরে দাঁড়িয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের বড় ৩০টি চা বাগান, মাঝারি ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান রয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। এসব চা বাগানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ চাপাতা আহরণে কাজ করছে।
গত বছর এসব চা বাগান থেকে ৯ কোটি ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩২ কেজি চাপাতা প্রক্রিয়াজাত করে প্রায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৮ কেজি চা উৎপাদিত হয়।
চলতি বছর প্রায় সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় চা বোর্ড, যা ২৫টি চা কারখানায় প্রক্রিয়াকরণ করে প্রায় দুই কোটি কেজি চা তৈরি হবে।
চা বাগানে কর্মরত শ্রমিক আব্দুল মালেক ও মনিরা সময় সংবাদকে জানান, চা বাগানে কাজ করে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ কেজি চাপাতা তোলা যায়। ৩ টাকা কেজি দরে চাপাতা তোলার কাজ করেন তারা। এতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়।
স্থানীয় চা চাষি মো. মনোয়ার হোসেন দিপু ও আবু হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, জেলায় চায়ের নিলাম কেন্দ্র না থাকায় প্রতিযোগিতামূলক চায়ের দাম পাচ্ছেন না।
তারা বলছেন, চাপাতা প্রক্রিয়াকরণ করার জন্য জেলায় নতুন নতুন চা কারখানা তৈরি হলেও সিন্ডিকেট বাণিজ্যের কারণে চাপাতার কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। জেলায় চায়ের নিলাম কেন্দ্র চালু হলে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
আর চা ব্যবসায়ী ফোরাত জাহান সাথী সময় সংবাদকে বলেন, জেলায় উৎপাদিত চা চট্টগ্রাম নিলাম কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করতে তাদের বাড়তি ব্যয় হয়। সে ক্ষেত্রে জেলায় উৎপাদিত চা জেলায়ই নিলাম হলে এ ব্যয় যেমন কমে আসবে, তেমনি এর ইতিবাচক সুবিধাও পাবেন চাষিরা। একই সঙ্গে জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
আর বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন সময় সংবাদকে জানান, চলতি বছরই পঞ্চগড়ে চায়ের নিলাম কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে চা বোর্ড।
পঞ্চগড়ে চায়ের নিলাম কেন্দ্র তৈরি হলে জেলার চা কারখানাগুলোতে প্রতিযোগিতামূলক চায়ের বাজার যেমন তৈরি হবে, তেমনি চা চাষিরা তাদের চা বাগানে উৎপাদিত চায়ের সঠিক দাম পাবে।