আজ পয়লা বৈশাখ, স্বাগত বাংলা ১৪৩০
নিউজ ডেস্ক:
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যোগ হয়েছে নতুন একটি বছর। আজ (শুক্রবার) পয়লা বৈশাখ। স্বাগত বাংলা নববর্ষ ১৪৩০। পয়লা বৈশাখে অতীতের সব গ্লানি মুছে বাঙালি ফিরে পায় নবপ্রাণ। বাংলার চিরায়ত উৎসব চৈত্র সংক্রান্তি ছিল গতকাল। একই সঙ্গে বাংলা ১৪২৯ সনের শেষ দিন।
বিশ্বের বুকে বাঙালি এক গর্বিত জাতি। পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে মধ্যে এই স্বজাত্যবোধ ও বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।
এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আজ নববর্ষ উপলক্ষে সরকারি ছুটি। বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বর্ষবরণের মহা আয়োজনে মেতে উঠবে গোটা দেশ। বর্ষবরণে মেতে উঠবে দেশের বাইরে থাকা বাঙালিরাও।
সেই সুদূর থেকে পয়লা বৈশাখে গ্রামের মানুষ তাদের জীবনপঞ্জিকা সাজায়। এদিন বাঙালি হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে স্বজনের বন্ধনে মিলে যায়। নানা স্বাদের পিঠা-পায়েসে আপ্যায়ন চলে দিনভর। চলে পান্তা উৎসবের মহাযজ্ঞ। গত কয়েক বছরগুলোত বৈশাখ উৎসবে যোগ হয়ে জাতীয় মাছ ইলিশও।
পয়লা বৈশাখ এলেই পরস্পরকে মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন, ব্যবসায়ীর অর্থ পরিশোধ করা, হালখাতা খোলার সেই চিরায়ত দৃশ্যগুলো ঘুরপাক খায়। বৈশাখ মানে গ্রামে ও শহরে মেলায় মানুষের ভিড়। বৈশাখী মেলার অন্যতম অনুষঙ্গ পুতুল নাচ, হাতি-ঘোড়ার সার্কাস, বায়স্কোপ। কোথাও আবার দেখা মেলে লাঠিখেলা, পালাগান, কীর্তনের আসর, নৌকা-বাইচ বা মাঠে কুস্তিখেলার দৃশ্য।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশ জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। রমনা বটমূলে এ দিন ভোরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট।
দিবসটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করবে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে।
বর্তমানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুধু আনন্দ-উচ্ছ্বাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ শোভাযাত্রাকে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো মর্যাদা দেয় বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের।