শ্যামনগরে ভাগ্নেকে কুপিয়ে জখম করে ও প্রেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টাকারি আইনজীবী মামা র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার
রঘুনাথ খাঁ:
২০০৪ সালে বিক্রি করে দেওয়া জমি ফিরিয়ে দিতে রাজী না হওয়ায় ভাগ্নে মাহফুজকে কুপিয়ে ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে দরজায় ছিকল তুলে ঘরে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টাকারি মামা অ্যাড. ফিরোজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনে থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত ফিরোজ হোসেন শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের মৃত তৈয়বুর রহমান গাজীর ছেলে ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ভ্যানচালক মাহাফুজুর রহমান জানান, একটি হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন নিতে ২০০৪ সালে মামা ফিরোজ ও তার ছোট ভাই তার ও ভাই শফিকুলের কাছে ৩২ শতক জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ওই জমি ফিরিয়ে দিতে রাজী না হওয়ায় তাকে, তার স্ত্রী, বাবা, মাসহ যারা হামলা মামলার প্রতিবাদকারি, প্রতিবেশী তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি মামলা খারিজ হয়ে গেছে। মামলা চালাতে যেয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে নারী পাচার ও নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মামলা দিতে মামা অ্যাড. ফিরোজ তার নারী মোয়াক্কেলদের ব্যবহার করেছেন।
মাহাফুজুর রহমান আরো বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পৌনে দুটোর দিকে মামা ফিরোজ আহম্মেদ, তার দুই মেয়ে, নানী আমেনাসহ সাতক্ষীরা থেকে ভাড়া করে আনা সাত/আট জন সন্ত্রাসী হাতে দা ও লোহার রড নিয়ে তাদের বাড়িতে ঢোকে। এ সময় তার স্ত্রী ফাতেমাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করা হয়। ঘরের মধ্যে ঢুকে ফিরোজ তাকে এলোপাতাড়ি মাথায় কুপিয়ে ও অন্যরা পিটিয়ে জখম করে ঘরের দরজায় ছিকল লাগিয়ে দিয়ে বসত ঘরের চারিপাশে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘর দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাইরে বের করে আনে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর আগেই সবকিছু পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে সাতক্ষীরা মেুডকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা ৫০০ শর্য্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে মামা ফিরোজকে প্রধান আসামী করে আরো পাঁচজনের নাম উলেখ করে পরদিন শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অন্য আসামীরা জামিন নিলেও মামা ফিরোজ বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। বিষয়টি তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক সেলিম রেজাকেও বলে কোন লাভ হয়নি। অবশেষে তারা র্যাব এর দ্বারস্ত হন। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনে থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছে।