পিএসজির বড় জয়ে মেসির অবদান, এমবাপের রেকর্ড
স্পোর্টস ডেস্ক:
নঁতের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে পিএসজি। এ ম্যাচে শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেন লিওনেল মেসি। ম্যাচের শেষ দিকে জালের দেখা পান কিলিয়ান এমবাপে। তবে শেষ গোলটাই হয়তো হয়ে থাকবে সবচেয়ে স্মরণীয়। কারণ রোমাঞ্চকর জয়ের এ ম্যাচে পিএসজির হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়লেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
ঘরের মাঠে শনিবার দিবাগত রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচে ৪-২ গোলে জিতেছে ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল। মেসি দলকে এগিয়ে নেয়ার পর গাউয়েন হাজামের আত্মঘাতী গোলে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। প্রথমার্ধেই দুই গোল শোধ করে ফেলে নঁত। দ্বিতীয়ার্ধে দানিলো পেরেরার গোলে অবদান রাখার পর যোগ করা সময়ে নিজেও ঠিকানা খুঁজে নেন এমবাপে।
চলতি মৌসুমে আগে থেকেই লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ২২ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল। পিএসজির জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি তার ২০১তম গোল। ২০০ গোল নিয়ে এত দিন চূড়ায় ছিলেন এদিনসন কাভানি।
দ্বাদশ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগেই এগিয়ে যায় পিএসজি। ফাবিয়ান রুইসকে বল দিয়ে ডি বক্সে ছুটে যান মেসি। এই ফাঁকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার খুঁজে নেন নুনো মেন্দেসকে। তার কাট ব্যাকে নঁতের একজনের পায়ে লাগলে একটুর জন্য নাগালে পাননি এমবাপে, পেছন থেকে ছুটে গিয়ে প্রথম স্পর্শে জালে পাঠান মেসি। চলতি আসরে এটি আর্জেন্টাইন মহাতারকার ত্রয়োদশ গোল।
পাঁচ মিনিট পর হাজামের আত্মঘাতী গোলে আরো পিছিয়ে পড়ে নঁত। মেন্দেসের ক্রস পা বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন সফরকারী গোলরক্ষক। কিন্তু বিপদ কাটেনি দেখে গোলমুখে ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন হাজাম। পরে এই ডিফেন্ডারের বাম পা ছুঁয়ে বল চলে যায় জালে।
বল নিয়ন্ত্রণে রেখে একের পর এক আক্রমণে নঁতের রক্ষণকে কঠিন পরীক্ষায় রাখে পিএসজি। অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ৩১তম মিনিটে ব্যবধান কমান লুদোভিক ব্লাস। হাজামের কাছ থেকে বল পেয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে বুলেট গতির শটে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল খুজে নেন ফরাসি মিডফিল্ডার।
দুই মিনিট পর ডি বক্সের মাথা থেকে মেসির শট বেরিয়ে যান ক্রসবার ঘেঁষে। ৩৬তম মিনিটে একটি শট জানলুইজি দোন্নারুম্মা ঠিক মতো ফেরাতে না পারলে ফিরতি বলে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন হাজাম। কিন্তু একটুর জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। এক মিনিট পর সমতা ফিরিয়ে ফেলে নঁত। কর্নারে জটলা থেকে জাল খুঁজে নেন ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড ইগনাতিয়াস গানাগো।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে মেসির দারুণ কারিকুরিতে দলকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে। তবে একটু দুরূহ কোণ থেকে লক্ষ্য রাখতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। কিন্তু ৫২তম মিনিটে ডি বক্সে অরক্ষিত নর্দি মুকিয়েলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি, এমবাপেকে বলও বাড়াতে পারেননি। আট মিনিট পর এগিয়ে যায় পিএসজি। কর্নার থেকে বল পেয়ে যান এমবাপে। ডি বক্সে বাইরে থেকে তার উঁচু করে বাড়ানো বলে দারুণ হেডে জাল খুঁজে নেন পেরেইরা।
৬৩তম মিনিটে মুকিয়েলেকে ফাউল করে পিএজির দারুণ একট সুযোগ নষ্ট করে দেন হাজাম। শুরুতে পেনাল্টি দেন রেফারি। তবে ভিএআরের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত পাল্টে দেন ফ্রি কিক। সেটা থেকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি, ঝাঁপিয়ে তার শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
৭৪তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে এমবাপের শট একটুর জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যোগ করা সময়ে অবসান হয় তার অপেক্ষার। মার্সেইয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচে জোড়া গোল করে কাভানির পাশে বসেছিলেন তিনি। টিমোথি পেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ছাড়িয়ে যান উরুগুয়ের স্ট্রাইকারকে।
এরপরও অবশ্য রেকর্ডের একটি পাতায় এখনও এমবাপের চেয়ে এগিয়ে কাভানি। পিএসজির হয়ে লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ ১৩৮ গোল তারই, তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোল ১৩৭টি। এই জয়ে ২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করল পিএসজি। সমান ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে নঁত আছে ১৩ নম্বরে। এক ম্যাচ কম খেলা মার্সেই ৫২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে।