স্বামীর সঙ্গে বাংলাদেশে থাকতে চান সেই ইন্দোনেশিয়ান তরুণী
নিউজ ডেস্ক:
ভাষা ভিন্ন, আলাদা সংস্কৃতি। এত অমিল। তবুও প্রেমের টানে বাংলাদেশের পটুয়াখালী বাউফলে এসেছেন ইন্দোনেশিয়ার তরুণী নিকি উল ফিয়া। বৃহস্পতিবার বাউফলে ইমরান হোসেনের নিজ বাসায় চলছে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে ভিনদেশী বউ দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী। স্ত্রীর কথা ভাষান্তর করে সবাইকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন স্বামী ইমরান।
এর আগে বুধবার রাতে সাড়ে ৭টার দিকে নিকিকে বিয়ে করেন ইমরান। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা শহিদুল ইসলাম এ বিয়ে পড়ান। একইদিন সকালে পটুয়াখালী জেলা জুডিশিয়াল জজ কোর্ট আদালতে বিয়ের এফিডেভিট সম্পন্ন করেন তারা।
২৫ বছরের ইমরান হোসেন বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খাজুর বাড়িয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও বিথী আকতারের বড় ছেলে। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। নিকি ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া প্রদেশের জেম্বার এলাকার বাসিন্দা। তারা বাবা ইউলিয়ানতো ও মায়ের নাম শ্রী আনি।
ইন্দোনেশিয়ান তরুণী নিকি উল ফিয়া জানান, বাংলাদেশে এসে তার খুবই ভালো লাগছে। এ দেশের খাবার ও এখানকার সংস্কৃতি তার খুব পছন্দ হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে থাকতে চান বলেও জানান তিনি।
ইমরান হোসেন বলেন, আমার নিজস্ব আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে খুবই ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। বাড়িতে গতকাল থেকে আসতেছে অনেক মানুষ।
জানা যায়, ২০১৬ সালে ফেসবুকে নিকির সঙ্গে পরিচয় হয় ইমরানের। প্রথমে বন্ধুত্ব হলেও, পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই পরিবারের সম্মতিতে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। নিকির পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এসে ইমরানের বাউফলের বাড়িতে যান নিকি। কিন্তু তার বয়স ২১ বছর না হওয়ায় তখন বিয়ে করতে পারেননি তারা। তাই দেশে ফিরে যান নিকি উল ফিয়া।
এরপর দীর্ঘ ৫ বছর পর গত সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে আসেন নিকি। ইমরান তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়ে যান বাউফলে। বুধবার রাত ৮টা সময় স্থানীয় কাজির উপস্থিতিতে ১০১ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন ইমরান। আজ বিয়ের আনুষ্ঠিকতা চলছে। ইমরানের পরিবার ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করলেও বাড়ি উৎসুক জনতায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
খাজুর বাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ বিশ্বাস বলেন, ভিনদেশী বউ দেখতে আসছি। নতুন বউ দেখতে তো সবাই আসে। এই বউ তো আবার ইন্দোনেশিয়া থেকে আসছে। তারা সুখী হোক এই কামনা করি।
দাশপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বুধবার রাতে তারা ১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। তাদের জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা।