ঝিকরগাছা শংকরপুরে কানাই সাহের আয়োজনে সাধুসঙ্গ,বাউল গান অনুষ্ঠিত
আব্দুল জলিল:
দক্ষিণ বঙ্গের বাউল সম্রাট ক্ষ্যাত ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহের ৩৩তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ঝিকরগাছার শংকরপুরে এক সাধুসঙ্গ, বাউল গান ও ভক্ত মিলনমেলার অনুষ্ঠিত।
ইংরেজি ২৬/২/২৩ তাং রবিবার ৯টার সময় বাউল আব্দুল জব্বর চিসতি ক্ষ্যাপা বাউল কানাই সাহের উত্তরসূরী আয়োজনে ঝিকরগাছার শংকরপুর মাঝের পাড়ায় কানাই শাহ স্মরণে সাধুসঙ্গ, বাউল গান ও ভক্ত মিলনমেলা ২০২৩ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়
এ উপলক্ষ্যে কয়েক দিন আগে থেকেই ভক্ত-শিষ্য ও সাধুদের আনাগোনা শুরু হয় অনুষ্ঠানস্থালে। কানাই শাহের তিরোধান দিবস উপলক্ষে তাঁর ভক্ত- শিষ্য ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে সরগম হয়ে উঠে অনুষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ার হোসেন।
বাগআঁচড়া প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শেখ নাছিমুল হাবিব শিপার, সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ আব্দুল কাদের, শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোবিন্দ চাটার্জী, বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কামরুজ্জামান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহাসীন আলী মেম্বর, আওয়ামীলিগ নেতা কবিরুজ্জামান মিঠু ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান,যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ জাহিদ হাসান পলাশ ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম সহ রাজনৈতিক সুধিজন,সামাজিক ব্যাক্তিত্ত,সাংবাদিক সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ফকির ছমির আলী চিশতি।
সূত্রে জানা গেছে, ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহ ছিলেন লালন সাঁইজির চতুর্থ ধাপের শিষ্য। তাঁর একটি পাণ্ডুলিপিও বাংলা একাডেমিতে জমা আছে। ক্ষ্যাপা বাউল কানাই শাহ বাংলা ১৩০৩ সালের ৩ ভাদ্র কপোতাক্ষ নদের তীরে বাঁকড়া গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেড়ে উঠেন। কিশোরকাল থেকে তিনি বাংলা পুরোনো ঐতিহ্য লোকসংগীতের চর্চা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি বাউল গান লেখার পাশাপাশি সুরকার ও শিল্পী হিসাবে ক্ষ্যাতি পান।
১৯৮৩ সালে ভারতের তাৎকালীন প্রধান মন্ত্রীর আমন্ত্রণে কানাই শাহ কলকাতার শান্তি নিকতনে বাউল সংগীত অনুষ্ঠানে স্বরচিত বাউল গান পরিবেশন করেন। সে অনুষ্ঠানে কানাই শাহ ক্ষ্যাপা বাউল উপাধিতে ভূষিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি ফোকলায় চার দিনব্যাপী বাউল মেলায় শ্রেষ্ঠ বাউল শিল্পী নির্বাচিত হন। জীবদ্দশায় সহস্রাধিক বাউল গান রচনা করেন কানাই শাহ।
পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বাউল গান নিয়ে সময় কাটিয়েছেন। সারা দেশে তাঁর অসংখ্য ভক্ত-শিষ্য রয়েছে। তিনি এ ধরণীর মায়া ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।