ঢাকায় মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিলোমিটার করা হচ্ছে

নিউজ ডেস্ক:

মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালার খসড়া করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি কমিটি। এতে ঢাকাসহ শহরের ভেতরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৩০ কিলোমিটার।

এছাড়া মহাসড়কে ১২৬–এর কম সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতা) মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। পাশাপাশি পেছনে আরোহী নিয়ে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না বলেও খসড়াটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

নীতিমালাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা, ২০২৩’। শিগগিরই খসড়াটি অনুমোদন পেতে পারে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এসব বিষয় যুক্ত করে এই নীতিমালার খসড়া করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আনিসুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ৯ সদস্যের একটি কমিটি।

কমিটিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।

খসড়া নীতিমালায় তিনটি উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে— ১. মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো। ২. মোটরসাইকেলের নিরাপদ ব্যবহার ও অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ তৈরি। ৩. মোটরসাইকেলচালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বে স্পোর্টি ও স্কুটি— এই দুই ধরনের মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করে। বাংলাদেশে বিক্রয়, বিপণন ও সড়কে চলাচলকারী প্রায় সব মোটরসাইকেলই স্পোর্টি শ্রেণির, যা অপেক্ষাকৃত দুর্ঘটনাপ্রবণ। অন্যদিকে স্কুটি মোটরসাইকেল তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এ জন্য নীতিমালায় স্কুটি মোটরসাইকেলের প্রসার এবং স্পোর্টির ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্পোর্টি মোটরসাইকেল দ্রুতগতিসম্পন্ন। এই গতির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার জন্য এসব মোটরসাইকেলের বসার আসন কিছুটা কৌণিকভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ, পেছনের দিকটা উঁচু। অন্যদিকে স্কুটি মোটরসাইকেল আরামদায়ক, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও অপেক্ষাকৃত কম গতিসম্পন্ন। এসব মোটরসাইকেলের বসার আসন সাধারণত ভূমির সমান্তরাল হয়। সব মিলিয়ে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দূরের পথে মহাসড়কসহ সর্বত্র মোটরসাইকেলের চলাচল দেখা যায়। বিশেষ করে উৎসবের সময় মোটরসাইকেলের ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ঘটছে। এ জন্য মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

সার্বিক বিষয়ে খসড়া প্রণয়ন কমিটির প্রধান আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মোটরসাইকেল দরকার, এটা ঠিক। কিন্তু এটা গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে যাবে। বিশেষ করে মহাসড়কে মোটরসাইকেলের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরি। স্কুটি মোটরসাইকেলে জোর দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চীনসহ অনেক দেশেই কম গতির মোটরসাইকেলে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মূল কারণ দুর্ঘটনা কমানো। সরকারও সেটাই করতে চাইছে। মানুষের প্রাণহানি কমানোই মূল লক্ষ্য।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)