সাতক্ষীরায় জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি কার্যদিবসে ২৭টি বিদ্যালয় বন্ধ রেখে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পিকনিক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
তুরস্কে চরম বিপর্যয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শোক দিবস উপেক্ষা করে ও সরকারি কার্যদিবসে ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রেখে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পিকনিকে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মহাদেবপুর ক্লাস্টারের (গুচ্ছ) সকল বিদ্যালয় বন্ধ রেখে এ ভুরিভোজে যান তারা সুন্দরবনের করমজলে।

উপজেলার খলিলনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত সরকার জানান, তাদের সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মহাদেবপুর ক্লাস্টারে ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা মিলে ঠিক করেন তারা একদিন পিকনিককে যাবেন বাগেরহাটার জেলার সুন্দরবনের করমজলে। সেই অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষককে ৯০০ টাকা করে চাঁদা ধরা হয়।

যারা যাবেন না, তাদেরকে বাধ্যতামূলক ৪০০ টাকা করে চাঁদা নির্ধারণ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে তারা ২৭টি বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে তিনটি যাত্রীবাহি বাস ভাড়া নিয়ে ১২০জন শিক্ষক পিকনিকে যান করমজলে। ফিরে এসেছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। তাদের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউইও) মো: আবদুল গণি ছাড়াও আরও পাঁচজন উপজেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এইউইও) স্বদীপ কুমার রায়, বাসুদেব সানা, সঞ্চয় মন্ডল, মাসুম বিল্লাহ ও দুলাল সরকার গিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যারা যাবেন না তাদের ৪০০ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। যারা যায়নি সবাই ওই টাকা দেয়নি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ভাবছেন যারা যায়নি আলোচনা করে তাদের টাকা ফেরত দেবেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মহাদেবপুর ক্লাস্টারের দায়িত্বে উপজেলার সহকারী প্রাথমিক কর্মকর্তা স্বদীপ কুমার রায় বিদ্যালয় বন্ধ করে করমজলে পিকনিক করার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের হাতে বছরে তিনদিন সংরক্ষিত ছুটি রয়েছে। সেখান থেকে একদিন ছুটি নিয়েছে তারা। একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ সবাইকে একসঙ্গে ছুটি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে থেকে পিকনিকের তারিখ নির্ধারণ থাকায় রাষ্ট্রীয় শোক দিবস থাকা সত্বেও তাদের যেতে হয়েছে। আপনি ছুটি নিয়ে ছিলেন কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই ছুটি নিয়ে গেছি।’

আলীপুর ক্লাস্টারের সহকারী প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব সানা জানান, বিনোদনের জন্য উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সঙ্গে তিনিসহ আরও পাঁচজন উপজেলার হকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে আপনারা পিকনিকে গেলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তিনি অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন। আপানি ছুটি নিয়ে গিয়েছিলেন কিনা প্রশ্ন রাখলে তিনি বলেন, ছুটি রোববারে অনুমোদন করিয়ে নেব।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আবদুল গণি জানান, প্রধান শিক্ষকদের সংরক্ষিত ছুটি থেকে বিদ্যালয়গুলোকে একদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিনোদনের জন্য কর্মকর্তা মাঝে মধ্যে যেতে পারেন। সেই চিন্তাভাবনা থেকে গিয়েছিলেন।

তবে কর্তকর্তারা কেউ তার কাছ থেকে ছুটি নেয়নি। জাতীয় শোক দিবসে পিকনিকে গেলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শোকদিবসতো আর বিদ্যালয়ে কোনো অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী পতাকা অর্ধনিমিত রাখা হয়েছিল সব বিদ্যালয়ে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)