ঝাল খাবার মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায় নাকি কমায়?
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
অনেকেই ঝাল খুব পছন্দ করেন, কেউ কেউ আবার একেবারেই ঝাল খাবার খেতে পারেন না। ঝাল খেলে অনেকেরই পেটে সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া অতিরিক্ত ঝাল হার্ট, লিভার কিংবা শরীরের যে কোনো অঙ্গের জন্যই ক্ষতিকর। তাই অনেকেই যতটা সম্ভব মরিচ খাওয়া এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা, তা কী জানেন?
রান্নায় একটি অপরিহার্য উপাদান হলো মরিচ। যে কোনো খাবারের স্বাদ বাড়াতে কিংবা পুষ্টিগুণে এ মরিচ সত্যি অনন্য। তবে রান্নায় দেয়া মরিচ আমাদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায় না কমায়, তা নিয়ে অনেকেই হয়তো দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন।
কাঁচা মরিচে আছে বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এন্ডোরফিনের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ক্যান্সার নিরাময় ও মানসিক অবসাদ কমাতেও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কাঁচা মরিচ। কাঁচা মরিচের মধ্যে থাকা উপাদান রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর তাই কাঁচা মরিচ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সমানভাবে উপকারী। হৃদ্যন্ত্রও ভালো রাখে কাঁচা মরিচ।
গবেষকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমিয়ে দেয় সপ্তাহে চারবার কাঁচা মরিচ খেলে।
ইতালিয়ান একাডেমির গবেষকরা বিষয়টি নিয়ে আট বছরের দীর্ঘ গবেষণা চালান। প্রায় ২৩ হাজার মানুষের খাবারের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে তারা দেখেছেন, প্রতি সপ্তাহে যারা চারবার কাঁচা মরিচ খেয়েছিলেন, তাদের অকালমৃত্যু ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম থাকে।
অন্যদিকে শুকনো মরিচে আছে ভিটামিন এ, যা চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। রেটিনার কোনো সমস্যা থাকলেও তা উপশম হয়। রক্তে প্লাটিলেট জমাট বাঁধতে দেয় না শুকনো মরিচ। ফলে হাইপারটেনশনের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তচাপও কম থাকে। ঝুঁকি কমে হার্ট অ্যাটাকেরও।
শুকনো মরিচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনেকের বুক জ্বালা, পেটে গ্যাস, অম্বল, বমিভাব এমনকি শরীরে অস্বস্তি বোধ তৈরি করে। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, শুকনো মরিচের চেয়ে কাঁচা মরিচ খাওয়া শরীরের জন্য বেশি উপকারী। কেননা, কাঁচা মরিচ শরীরের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে না।
যারা জিমে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করেও শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে পারছেন না, তারা প্রতিদিন একটি কাঁচা মরিচ খেয়ে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কামাতে পারেন। কাঁচা মরিচ ঘাম তৈরি করে শরীরের জমে থাকা ক্যালেরি পুড়িয়ে বাড়তি ওজন কমিয়ে আনে।
এ ছাড়া মরিচে থাকা ভিটামিন ‘এ’ হাড় ও দাঁতকে মজবুত করে তোলে। হঠাৎ ঠান্ডা কিংবা সাইনাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে এ মরিচ। মরিচে থাকা ভিটামিন ‘কে’ শরীরের রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, যা ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। মরিচের এসব উপকারী গুণ মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায় না বরং কমায়। তাই প্রতিদিন দুপুরের খাবারে মরিচকে নিয়মিত সঙ্গী করে নিতে পারেন আজ থেকে।