সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় চলছে হরিলুট, উৎকোচের বিনিময়ে নিরব বনবিভাগ

শ্যামনগর প্রতিনিধি:
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্য ( নিষিদ্ধ) এলাকায় চলছে হরিলুট। নিষিদ্ধ এলাকায় জেলেদের প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে সবকটি নদী ও খাল। পুরো চক্রটি চলছে বর্তমান পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসেন চৌধুরীর প্রত্যক্ষ মদদে। অভিযোগ উঠেছে তিনি সাতক্ষীরা রেঞ্জে যোগদানের পর থেকে পাল্টে ফেলেছে সরকারি সব নিয়ম। তার প্রধান সিপাহী সালার দায়িত্ব পালন করছেন বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম।
রেঞ্জের সাথে বুড়িগোয়ালিনী ষ্টেশন হওয়ায় তিনি এ দায়িত্ব পান।  এলাকাবাসীর দাবি অচিরেই নিষিদ্ধ এলাকায় জেলেদের অবাদ  বিচরণ বন্ধ না হলে ধবংস হয়ে যাবে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকার মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ ও মৎস্য শিল্প। প্রতি স্টেশন থেকে যে সমস্ত পারমিট দেওয়া হচ্ছে উক্ত পারমিটে সিল মারা থাকে যে, “অভয়ারন্য  এলাকায় গাছ কাটা মাছধরা নিষিদ্ধ ও অজামিনযোগ্য অপরাধ,১৩০ গ্রাম এর নিচে মহিলা কাকড়া ও ২০০ গ্রামের নিচে পুরুষ কাঁকড়া ধরা নিষেধ।
এ ছাড়া আটল দিয়ে কাঁকড়া ধরা নিষেধ” ০। কাগজ-কলমে নিয়ম থাকলেও কার্যক্ষেত্রে তার উল্টো।একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্য এলাকাগুলো প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা কে মোটা অংকের টাকার উৎকোচের বিনিময়ে দখলে রেখেছে।
শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালি গ্রামের ব্যবসায়ী আবু সালেহ ২২ খানা, ডুমুরিয়া অয়ন কোম্পানির ১৫ খানা, বুড়িগোয়ালিনীর কথিত ডাঃ শরীফ এর ৪৫ খানা,কৈখালী বুলবুলের ১০/১২ খানা,নূরুজামানের ১০ খানা,ভেটখালীর আব্দুল রহিম এর ৪০/৪৫ খানা, দাতিনাখালির ইসমাই সানার ৪০খানা,বুড়িগোয়ালিনীর জালাল মোল্লার ৩০ খানা, ৯নং  সোরার সহিদুলএর ২৫ খানা, কয়রা কামরুল কোম্পানির ২০খানা,চাদনিমুখার শহিদ ও বাবুর ১০ খানা  ও কোবাতক এলাকার লুৎফর মোল্লার ২৫ খানা নৌকা সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকা মাছ কাঁকড়া আহরণ,  মূল্যবান গাছ কাটা সহ মায়াবী হরিন নিধন অব্যাহত রেখেছে।
ব্যবসায়ী ও নৌকা মালিকদের নিকট থেকে অবৈধ টাকা আদায়ের জন্য রেঞ্জ কর্মকার্তার নির্দেশে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম গড়ে তুলেছেন নিজস্ব দালাল চক্র। সুন্দরবনের মাছ ব্যবসায়ী,নৌকা ও সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে যানা গেছে,দালাল চক্র হচ্ছে, কৈখালী এলাকার বুলবুল, হরিনগরএলাকার আজিবর কদমতলা এলাকার আমজাদ, বুড়িগোয়ালিনী এলাকার ইসমাইল  সানা,শহিদুল মোল্লা,হাছান,জালাল মোল্লা,গাবুরার আসাদুল কবোতক এলাকার লুৎফার ।
এ সমস্ত দালালেরা সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায়  যাওয়ার জন্য  বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তাকে দেওয়ার জন্য নৌকা প্রতি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করে। এ ছাড়া দোন দড়ি নৌকা প্রতি ৫শত টাকা,আটল প্রতি নৌকায় ১৫ শত,চরপাটা নৌকা প্রতি ২  হাজার টাকা,গয়সা  ও  ফাস  জাল নৌকা প্রতি ২ হাজার টাকা, বেননি জাল প্রতি নৌকায় ২৫ শত টাকা, ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার প্রতি  ৬  হাজার টাকা  গোন প্রতি (১৫) দিনে ।
বন বিভাগের উর্দূতন  সাবেক কর্মকর্তা ও বন বিশেষজ্ঞদের মতে সুন্দরবনে নিষিদ্ধ এলাকায় জেলে ঠেকাতে ও মাছ কাকড়া  সহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রজনন রক্ষা করতে এমপি মহোদয় মাসে একবার, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ১৫ দিনে একবার,ও সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা সপ্তাহে  একবার নিষিদ্ধ এলাকায় পরিদর্শন করলে রক্ষা করা সম্ভব।
গত বছর সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা  ড, আবু নাসের মোহাম্মাদ মহসিন হোসেন সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকা অভিযান চালিয়ে ৪ জন জেলে সহ ৪০কেজি আটক করেছিলেন। এতে প্রতিওমান হয় যে নিষিদ্ধ এলাকায় ছেলেদের অবাদ বিচরণ।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সহকারী বন  সংরক্ষক, এ কে এম ইকবাল হোসেন চৌধুরীর মুঠো ফোনে ০১৯৯০০৫৮৯৩ নম্বরে কল করলে ফোনটি রিসিভ না হওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)