আফগানিস্তানে প্রচণ্ড ঠান্ডায় ১৬৬ জনের প্রাণহানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানে চলমান শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে এ পর্যন্ত ১৬৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশটিতে এমনিতেই চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ত্রাণসংকটে পড়ায় বিপর্যস্ত আফগানদের জনজীবন।
গত ১০ জানুয়ারি থেকে আফগানিস্তানে তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রিতে নেমে গেছে। ভয়াবহ তুষারপাত আর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছে দেশটির সাধারণ মানুষ।
সহায়তাকারী সংস্থাগুলো ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আগেই বিপদের শঙ্কা করেছিল। তারা জানায়, দেশটিতে ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ক্ষুধার্ত এবং ৪০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানায়, গত সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ৮৮ জন ছিল। সেই সংখ্যা এখন ১৬৬। দেশের ৩৪ টি প্রদেশের ২৪ টিতে মানুষের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আব্দুল রহমান জাহিদ এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, বন্যা, বাড়ি গরম করার জন্য গ্যাস হিটার ব্যবহার, আগুন লাগা ও গ্যাস লিকেজের কারণে এসব মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দেশটিতে মারা গেছে প্রায় ৭০ হাজার গবাদিপশু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, এ সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব বাদাখশান প্রদেশের একটি গ্রামেই শ্বাসকষ্টে ১৭ জন মারা গেছে।
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ত্রাণ সহায়তার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান ত্যাগ ও সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্বিতীয় শীতকাল পার করছে আফগানরা।
আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ঠান্ডার কারণে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।
এক টুইটে তিনি লেখেন, প্রকৃতির ওপর কারও হাত নেই। তবে ঠান্ডায় এমন প্রাণহানি কষ্টের বিষয়।
তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সর্বোচ্চ সাহায্য করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাণহানি রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ভর করছে তালেবানের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার ওপর। যদিও অর্থনীতির চাকা পুনরায় সচল করতে বারবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তালেবান নেতারা।