উৎপাদন খরচ বেশি;দুশ্চিন্তায় কৃষক 

তালা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় শীত,কুয়াশা উপেক্ষা করে ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক। উপজেলার সকল ইউনিয়নে কৃষকরা ক্ষেতে বোরো ধানের বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করছে। তবে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় দুশ্চিন্তা আছে কৃষক।
মাগুরা,খলিশখালী,খলিলনগর,ইসলমকাটি,ধানধিয়া,নগরঘাটা,খেশরা ইউনিয়ন সহ প্রায় অধিকাংশ ইউনিয়নের মাঠে বোরো ধান লাগানোর মহা কর্মযজ্ঞ চলছে। কৃষকের চোখে মুখে কর্ম দীপ্তির ছাপ।
চারিদিকে সবুজের সমারোহ। বীজতলা থেকে চারা(ধানের পাতা) তুলে জমিতে রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। চারার বয়স ১০-১৫ দিনের মধ্যে রোপণ করতে হয় এমন কথাই বলেন, মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক আরশাদ কাগচী। পেশায় তিনি একজন বর্গা চাষী। এক বিঘা জমির চার ভাগের একভাগ ধান সেচ পাম্পের পানি জন্য। একভাগ জমির মালিক। আর অন্য দুই ভাগ তার। উন্নত জাতের ধান চাষাবাদ করলে বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ধান পাওয়া যায় এমনটাই বলেন তিনি।
খলিশখালী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামে রাজ্জাক সরদার বলেন,এবার বোরো রোপণে খরচ হচ্ছে বেশি।বিগত বছরের প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ছিল ২০ টাকা, এ বছর ২৪ টাকায় কিনতে হচ্ছে আমাদের। টি এস পি সার কেজি প্রতি প্রকারভেদ ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তবে সব চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে পটাশ সারের,যা গত বছর ছিল ১৬ টাকা সেই সার এ বছর কিনতে হচ্ছে ২২ টাকায়।
খেসরা ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের আজহারুল ইসলাম নামের এক চাষী বলছিলেন,লবণাক্ততার কথা। এবার জমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। দেখা যায় কোথায় কোথায় লবণাক্ততার কারণে বীজতলা প্রায় অর্ধেক  নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও পাতার(ধানের চারা) অভাব নেই। কিন্তু পাতার দাম বাড়তির দিকে। বিগত বছর পাতার দাম ৫০০ থেকে ৭৫০(বিঘা প্রতি) টাকার মধ্যে ছিল। সেই পাতা এ বছর ২০০০ থেকে ২৫০০(বিঘা প্রতি) হাজার টাকা কিনতে হচ্ছে। এর ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ বেশি।
খলিলনগর ইউনিয়নের কৃষক মতিয়ার শেখ বলেন,একদিকে লবণাক্ততার পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি,তেমনি ডিজেল এর দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের মত প্রান্তিক চাষীদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। চলতি বছরে প্রতি কেজি ডিজেল ১৪০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে,যা বিগত বছরে ৭০ টাকা করে ছিল।
সরুলিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, এবার বর্ষা মৌসুম বৃষ্টি অভাবে খাল বিলে পানি কম আছে। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতায় বলে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাবে। এ জন্য আমরা ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকে বিদুৎ চালিত মোটর দিকে ঝুঁকছে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বলেন,  আমাদের লক্ষ্য মাত্রা এ বছর তালা উপজেলায় ১৯,৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। সরকারের পক্ষ থেকে হাইব্রিড, ব্রি-ধান ২৮, উপষি জাতের ৫ কেজি বীজ সহ ১০ কেজি টি এস পি ১০ কেজি এম ও পি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩৬০০ জন কৃষককে দুই কেজি করে উচ্ছ ফলনশীল হাইব্রিড বীজ ধান দেওয়া হয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)