ডুমুরিয়ায় পাউবো’র জমি দখলের মহোৎসব: বিক্রিতে চলছে হরিলুট
আব্দুর রশিদ, খুলনা :
জায়গা পানি উন্নয়ণ বোর্ডের। কিন্তু ১৩ বছর আগের একসনা ডিসিআরের দাবি এক মুক্তিযোদ্ধা ও এক সমিতির কর্মকর্তার। এদিকে ঘর করছেন ভিন উপজেলার বাসিন্দা। এমনই জগাখিচুড়ি’র মধ্যে চলছে পাউবোর জায়গা নিয়ে হরিলুট। ঘটনাটি ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া গ্রামে। সরেজমিন যেয়ে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, থুকড়া জনতা সমিতির পরিত্যক্ত গার্মেন্টেস’র দক্ষিণ পাশে নদীর কিনারায় পানি উন্নয়ণ বোর্ডের জায়গায় বাড়ি নির্মান করছে কয়রা এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুরুল আলম। তার পাশে জামানো খুটি দিয়ে ঘর তৈরি করছে থুকড়া এলাকার জাহিদ সরদার। শুধু মঞ্জুরুল বা জাহিদ না এরকম শ’শ মানুষ নদীর দু’পাড়ে পাউবোর জায়গা অবৈধ্য দখল করে স্হাপনা নির্মান করায় ব্যস্ত রয়েছে। এখানে থুকড়া ও আমভিটা এলাকায় শ’শ একর জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ নম্বর পোল্ডারের অর্ন্তভ‚ক্ত।
এসব জমির অধিকাংশ অবৈধ্য দখলদারের দখলে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। সব চেয়ে বেশি জমি দখল করে নানা স্হাপনা তৈরি করেছে থুকড়া জনতা সমিতি। বেশি মুনাফার লোভে হাজার হাজার মানুষ এ সমিতিতে টাকা আমানত রাখেন। কিন্তু সমিতির সর্বময় কর্তা সেসব টাকা নিজের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করায় সমিতিটি দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এখন নতুন কৌশল হিসেবে পাউবো’র এসব জায়গা নিজেদের দাবি করে অনেককে ভোগ দখলের জন্য ভূয়া ইজারা দিচ্ছেন। মঞ্জুরুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, সাহেবকে ( জনতা সমিতির কর্তাব্যক্তি আব্দুল কুদ্দুস) টাকা দিয়ে দুই কাছা জমি নিয়ে বাড়ি করছি।
জনতা সমিতির কোন সদস্য কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তারা এখনও এখানকার ভোটার না। আমরা কয়রা উপজেলার আংটিহারা গ্রাম থেকে ২/৩ বছর আগে থুকড়া এলাকায় এসে বাসা ভাড়া করে দিনমুজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। একমাস আগে টাকা দিয়ে এ জায়গা নিয়েছি। পাশেই জাহিদ সরদার পিলার দিয়ে ঘর করছে। তবে ওই সময় তাকে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া অনেকেই নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে জনতার কাছ থেকে এসব জায়গা নিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। এব্যাপারে পাশের জমির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী নাজিম উদ্দীন বলেন, আমাদের জায়গা পানি উন্নয়ণ বোর্ড বেশ আগে একর করে নেয়। পরবর্তীতে ৫৭ শতাংশ জমি পাউবো থেকে ইজারা নেওয়া হয়। এ জমি তাদের দখলে দাবি করে বলেন, জনতা সমিতি হঠাৎ দেখছি অন্যদের কাছে তাদের জমি বিক্রি করছে। জনতা সমিতি’র দাবি করে বিক্রি করছে।
এ ব্যাপারে জনতা সমিতির প্রিন্সিপ্যাল অফিসার এস এম গোলাম কুদ্দুস বলেন, ও জমি আমাদের ছিল। পাউবো অধিগ্রহণ করার পর আমরা ডিসিআর কাটতে থাকি। এখন আমাদের সদস্যদের নাম মাত্র মুল্যে বিক্রি করছি ডিসিআর মুলে। এ ব্যাপারে খুলনা নুরনগরস্হ্য পানি উন্নয়ণ বোর্ড পওর বিভাগ এর এস ডি মিজানুর রহমান বলেন, পাউবোর জায়গা অন্য কেউ বিক্রি করার সুযোগ নেই। এ ধরনের ঘটনা সত্য হলে অবশ্যই দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নেয়া হবে।
Please follow and like us: