পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল পুনঃখনন কাজ সিডিউল মোতাবেক করার দাবী
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি:
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-২ এর আওতায় পার কাদাকাটি, পুটিমারী ও শাহাপুর খাল পুনঃ খনন কাজের শুরুতেই সিডিউল মোতাবেক কাজ না করার অভিযোগে এলাকাবাসী সোচ্চার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আশাশুনি, সাতক্ষীরা সদর ও তালা উপজেলার পারকাদাকাটি খাল ০.০০০ হতে ৪.৪০০ কিঃমিঃ, পুটিমারী খাল ০.০০০ হতে ৪.০২৫ কিঃমিঃ ও শাহাপুর খাল ০.০০০ হতে ৩.৪০০ কিঃমিঃ মোট ১১.৮২৫ কিঃমিঃ খাল পুনঃখননের জন্য ২ কোটি ৫১ লক্ষ ৬ হাজার ৪৬১ টাকা চুক্তিতে কাজ করাচ্ছেন কুষ্টিয়ার ন্যাচারাল নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শাহাপুর গ্রামে কাজ শুরু করা হলেও শুরুতেই সিডিউল মোতাবেক কাজ না করা, রেকর্ডীয় ফসলী জমি ও ভিটেবাড়ীর জমিতে মাঠি ফেলে জমি নষ্ট করাসহ নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। জমির মালিকসহ এলাকার মানুষ অনিয়ম দূর করে সঠিক ভাবে কাজ করার দাবীতে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শামছুল হুদা লাল্টু জানান, প্রথমে নির্দিষ্ট স্থানে খনন কাজ শুরু করা হলেও দু’টি ঘর বাচাতে গিয়ে বাদ রেখে খনন কাজ করা হয়েছে। কোমর উদ্দিনের রেকর্ডীয় জমির কাছে ধ্বস লাগায় তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাকে ক্ষতি পুরন দেওয়ার কথা হয়েছে। জমিতে ফেলানো মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে। এছাড়া কিছু স্থানে রেকর্ডীয় জমিতে মাটি ফেলা হয়েছে। রেকর্ডীয় জমিতে খনন বা মাটি ফেলে বাঁধের তলায় না পড়ে সে জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি দাবী জানান।
দিছার উদ্দিন মোড়ল জানান, খালের সীমানা ঠিক করে খনন কাজ করার কথা বলেছি, কিন্তু তারা শুনছে না। কাজের ম্যাপ ও কাগজপত্র দেখতে চাইলেও দেখাচ্ছেনা। খালের শুরু শাহাপুর প্রাইমারী স্কুলের কাছ থেকে হলেও প্রায় ১০০০ হাত বাদ রেখে মাহবুবুরের বাড়ির কাছ থেকে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
হাসিব খান জানান, প্রথমে যে মাপ কাজ করা হয়েছিল, সেখানে স্কুলের কাছ থেকে গোরালী ব্রীজ পর্যন্ত কাজ করার কথা শুনেছি। কিন্তু পরবর্তীতে স্কুল থেকে খনন না করে মাহবুবরের বাড়ির কাছ থেকে খনন করা হচ্ছে। খালের এক পাশে বাদ রেখে অন্য পারে রেকর্ডীয় জমিতে মাটি ফেলে বাধ/রাস্তা পথ করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
নিয়ম অমান্য করার কারনে আজিজুর রহমান খান, ইসমাইল খান, গফুর খান, মাহবুবর রহমান ও কোমর উদ্দিনের বসত বাড়ির জমি বা ফসলী জমির উপর মাটি ফেলা হয়েছে। ফলে তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি খাস জমিতে দখল নিয়ে বসত ঘর নির্মানকারীরা লাভবান হচ্ছে। তাদের দাবী মানবিক দিক বিবেচনা করে সামান্য ছাড় দেওয়াতে তাদের আপত্তি না থাকলেও অন্যের রেকর্ডীয় জমি খালের সাথে একাকার করে দিয়ে পরিবারগুলোকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে হতবাক করে তুলেছে।
এব্যাপারে পাউবো’র শাখা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মতিন সাংবাদিকদের জানান, মানবিক কারনে সামান্য ছাড় দেওয়া হতে পারে, কিন্তু কারো রেকর্ডীয় জমিতে খাল খনন বা মাটি ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবেনা। আমি এলাকায় গিয়ে বিষয়টি দেখে নিয়মমত খনন কাজ করতে ব্যবস্থা নেব বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।