প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার আত্মহননের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মানসিক ও শারিরীকভাবে চাপ প্রয়োগ করে আত্মহননের প্ররোচনায় জড়িত একাধিক মামলার আসামী আব্দুর রহিমসহ অন্যান্য আসামীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শ্যামনগরের কৈখালী গ্রামের মো: নুরুল ইসলাম সরদারের কন্যা মোছা: নুরুন্নাহার পারভীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন আমার স্বামী মো: আবুল বাসার কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনামের সাথে চাকুরি করে আসছিলেন।
কিন্তু সম্প্রতি কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন ধর্ষণ, মানব পাচার ও পুলিশের উপর হামলাকারীসহ একাধিক মামলার আসামী আব্দুর রহিম। অযোগ্য ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিমসহ তার অপকর্মের সহযোগীরা দীর্ঘ ১০ মাস ধরে আমার স্বামীকে মানসিক ও শারিরীকভাবে স্কুলে ও স্কুলের বাইরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এছাড়া আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মারুফা নামে এক মহিলাকে দিয়ে ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা বানোয়াট মামলা সৃষ্টি করে আমার স্বামীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে।
এমনকি ওই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির কথা বলে আব্দুর রহিম, আলী মোতুর্জা, আব্দুল মজিদ, সালাউদ্দীন, আব্দুল মান্নান, মোছা: মারুফা এবং জাকির গাজী প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে এবং মোবাইলের মাধ্যমে ৫০ লক্ষ টাকা দাবী করে। আমার স্বামী নিরুপায় হয়ে আব্দুর রহিমের হাতে ৫ লক্ষ টাকা নগদ প্রদান করে। টাকা পেয়ে আরো ৪৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমার স্বামী ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্কুলের অফিস রূমের মধ্যে উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমার স্বামীকে মারপিট করতে উদ্যাত হয় এবং খুন জখমসহ বিভিন্নœ হুমকি প্রদর্শণ করে। তাদের কারনে আমার স্বামী মানসিকভাবে ভীতুসন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে।
তিনি অসুস্থ হওয়ার পর সভাপতি আব্দুর রহিম এর বরাবর ছুটির দরখাস্ত করলে পাষান্ড আব্দুর রহিম তা মঞ্জুর না করে ২ জানুয়ারি‘২৩ তারিখে বিধি বর্হিভূতভাবে কেন চাকরীচ্যুত করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) প্রদান করেন। শোকজ নোটিশ প্রাপ্তির পর আমার স্বামী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে উপায়ন্তর হয়ে গত ৪ জানুয়ারি‘২৩ তারিখে নিজ বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে গোপনে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তিনি আরো বলেন একজন প্রধান শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে মান হানি করে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে উল্লেখিত ব্যক্তিরা। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করি। উক্ত মামলায় ৬ জন আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে আসামীদের স্বজনরা প্রকাশ্যে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে খুন জখমসহ আমাকে এবং আমার সন্তানদের হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। এছাড়া আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসার পর আমাদের মজা দেখাবে বলে আস্ফালন করে যাচ্ছেন। আমরা উল্লেখিত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির নিশ্চিতকরাসহ আমাদের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বড়ছেলে জিএম মেহেদী হাসান ছোট ছেলে জিএম সামিউল আডম শ^শুর মো: নুরুল ইসলাম ও নাজনীন জাহান।