৬৮ বছর পর দখলমুক্ত হচ্ছে বেনাপোল হাকর নদ
স্টাফ রিপোর্টার :
অবশেষে ৬৮ বছর পর দখলমুক্ত হতে চলেছে বেনাপোলের হাকর নদ।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে নদ খননের কাজ। ভারতের ইছামতী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত প্রবহমান হাকর নদ। ১৯৫৫ সালে নদের দুই পাড়ের প্রভাবশালী লোকজন দখল করে নেয়।
ভূমি কর্মকর্তাদের সহায়তায় ৬২ সালে হাকর নদ চলে যায় ব্যক্তি মালিকানায়। দীর্ঘ এ সময়ে নদটি দখলমুক্ত করতে শত চেষ্টা চললেও তা হয়নি। শেষতক আলোর মুখ দেখল বেনাপোলবাসী। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, বেনাপোলের নারায়ণপুর থেকে বেনাপোল সাদীপুর চেকপোস্ট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার খনন করা হবে।
২২ কিলোমিটার দূরত্বের বাকি অংশ পরবর্তীতে ধাপে ধাপে খনন করে বিভিন্ন বিলের সঙ্গে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হবে। গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। দখলমুক্ত করতে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কোনো বাধা আসছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী খনন চলছে। খনন শুরুর আগে রেকর্ড অনুসরণ করা হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ২০০ গজ দূরে হাকর নদের অবস্থান। বন্দরের পানি নিষ্কাশনের জন্য হাকর নদ খনন করা খুবই অপরিহার্য। ভারতের গঙ্গা, ইছামতী, ফারাক্কা ও কুদলা নদীর সীমান্তের সঙ্গে সংযুক্ত হাকর নদ। এক সময় বেনাপোল সীমান্ত- সংযুক্ত হাকর নদীপথে দুই দেশের মধ্যে চলাচল করত লঞ্চ ও রং-বেরঙের পালতোলা নৌকা।
ভারতের কলকাতা, বনগাঁ, বশিরহাট থেকে বিভিন্ন ধরনের মালামাল নিয়ে বজরা নৌকা ভিড়ত বেনাপোলে।
নদটি ছিল এ অঞ্চলের জেলেদের মাছ শিকারের প্রধান ক্ষেত্র। মৎস্য, কৃষি ও ব্যবসায়ীদের জীবন-জীবিকার উৎস ছিল নদটি। বিশাল পরিসরে নদটির দুই পাড়ে গড়ে ওঠে সাদিপুর, নামাজগ্রাম, নারায়ণপুর, ধান্যখোলা, নাভারনসহ অসংখ্য গ্রাম।
তবে কালের বিবর্তনে প্রবহমান নদটি সরু খালে পরিণত হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর নদটি ঘিরে শুরু হয় অপদখল আর কেনাবেচার উৎসব। অনেকেই নদটি দখল করে তৈরি করেছেন বড় বড় বাড়ি। রাজনৈতিক পালাবদলে এলাকার প্রভাবশালী মহল জবরদখল করে খনন করেছেন হাজারো পুকুর। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন মাছের ঘের। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে জোয়ারভাটা।
Please follow and like us: