শ্যামনগরে প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারকে আত্মহ্যার প্ররোচনা সভাপতিসহ সাতজনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও কৈখালি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমসহ চারজন অভিভাবক ও তিনজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি গ্রামের নুরুন্নাহার বাদি হয়ে বুধবার রাতে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অন্য আসামীরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের শেখ মোমিন আলীর ছেলে কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের অভিভক সদস্য আলী মোর্তুজা, একই গ্রামের মোস্তফা আলী গাজীর স্ত্রী অভিভাবক সদস্য মারুফা খাতুন, পশ্চিম কৈখালি গ্রামের জমির গাজীর ছেলে অভিভাবক সদস্য জাকির গাজী, সাহেবখালি গ্রামের শেখ নওশের আলীর ছেলে কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ সালাহউদ্দিন, একই গ্রামের বাহার আলী গাজীর ছেলে সমাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক আব্দুল মান্নান ও বৈশখালি গ্রামের মতিউল­াহ সরদারের ছেলে শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক আব্দুল মজিদ।

মামলার বিবরনে জানা যায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম সভাপতি থাকাকালিন গত বছর অফিস সহায়ক, আয়া, নৈশপ্রহরী ও ল্যাবসহকারি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার। আবেদন বিধি মোতাবেক না হওয়ায় আয়া পদে মারুফা খাতুনের আবেদনপত্র বাতিল করে নিয়োগ বোর্ড।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় মারুফা খাতুন প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারের নামে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টা ও টাকা আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন। চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধান শিক্ষককে হয়রানি শুরু করেন। বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক আব্দুল মজিদ, সহকারি শিক্ষক সালাহউদ্দিন, শিক্ষক আব্দুল মান্নান , অভিভাবক সদস্য মারুফা খাতুন ও জাকির হোসেনের যোগসাজসে বর্তমান সভাপতি আব্দুর রহিম ও অভিভাবক সদস্য আলী মোর্তুজা প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।

প্রধান শিক্ষক তাদেরকে স¤প্রতি পাঁচ লাখ টাকাও দেন। বাকী ৪৫ লাখ টাকার জন্য আলী মোর্তুজাসহ অন্যান্যরা প্রধান শিক্ষককে চাপসৃষ্টি ও হুমকি অব্যহত রাখে। এতে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক সভাপতির কাছে ছুটি চান। সভাপতি তা মঞ্জুর না করে গত ২ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষককে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেন। এতে প্রধান শিক্ষক মানসিক হারসাম্য হারিয়ে ফেলে বুধবার গোপালপুরে তার ভ্য়ারা ভাই ইটালী প্রবাসী আবু সাঈদের বাড়ির ভাড়া বাসার সামনে আমগাছে গলায় তোয়ালের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম বাদল জানান, কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ সাতজনের নাম উলে­খ করে মৃতের স্ত্রী নুরুন্নাহার বাদি হয়ে বুধবার রাতে পেনাল কোডের ৩০৬ ধারায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)