পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.২, বইছে হিমেল হাওয়া
নিউজ ডেস্ক:
দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সেইসঙ্গে কমছে তাপমাত্রা। বুধবার সকাল ৯টার দিকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল মঙ্গলবার রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকালের চেয়ে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কম বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
এদিকে তাপমাত্রা ১০ নিচে না নামলেও তীব্র শীত অনুভব হচ্ছে এ জেলায়। সকাল থেকেই মিলছে না সূর্যের দেখা। বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলাজুড়ে কুয়াশা আর শিশির ঝরতে দেখা যায়। গ্রামে শহরের হাটবাজারগুলোতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায়। শীত নিবারণে ফুটপাত থেকে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন নিম্নবিত্তরা।
স্থানীয়রা জানায়, কদিন ধরেই শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। বিকেল গড়লেই উত্তর-পূর্বকোণ থেকে বইতে থাকে ঠাণ্ডা বাতাস। রাতে ও সকালে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে।
এদিকে, শীতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে শুরু করে ছোটখাটো যানবাহন ভ্যানচালক মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। ভোর-সকালে শীতের তীব্র প্রকোপের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকে। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। শীতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা।
পাথর শ্রমিক জুয়েল, এমরান ও জাকির জানান, ঠাণ্ডায় নদীর পানি বরফের মত মনে হয়। তারপরেও আমাদের পাথরই জীবিকা। তাই কাজে বেড়িয়েছি। কদিন ধরে নদীর ঠাণ্ডা পানিতে কাজ করে জ্বর-সর্দিতে ভুগলাম। কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে সকালেই পাথর তোলার সরঞ্জাম নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি। একই কথা জানান কয়েকজন দিনমজুর ও নারী পাথর শ্রমিক।
এদিকে শীতে প্রকোপে বেড়েছে নানান শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এরমধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
চিকিৎসকরা বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, সকাল ৯টার দিকে ১১.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশা না থাকলেও উত্তর-পূর্বকোণ থেকে ২ দশমিক ৯ নটিক্যাল গতিতে বয়ে যাওয়া হিমেল বাতাসের কারণে ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে। সামনে আরো কমবে তাপমাত্রা। ৃ