নানা নির্যাতনের অভিযোগেও প্রতিকার হয়নি থানায় বছর না পেরোতেই ডুমুরিয়ায় এক গৃহবধুর আত্মহত্যা !
আব্দুর রশিদ, খুলনা:
বিয়ের এক বছর না পেরোতেই ডুমুরিয়া থানা থেকে আধা কিলোমিটার অদুরে বৈশাখী দেবনাথ (২০) নামে এক গৃহবধুকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বী হয়েও শশুর ১০ লাখ টাকার কামিনের শর্তে এবং পাষন্ড স্বামী স্টাম্পে মুচেলকা দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি এ গৃহবধুর।
কীটনাষক পানের ১ মাস ৩ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় শুক্রবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হতভাগিনী গৃহবধুর পারিবাকি সুত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হাসপাতাল ও স্হানীয় একাধিক দায়িত্বশীল সুত্রে জানা যায়, ১ বছর আগে তালা উপজেলার কানাইদিয়া গ্রামের শ্যামকৃষ্ণ দেবনাথের মেয়ে বৈশাখী দেবনাথের সাথে ডুমুরিয়া উপজেলার চিংড়া গ্রামের গৌতম দেবনাথের ছেলে প্রান্ত দেবনাথের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ওই নববধুকে স্বামী ও তার শাশুড়ী অত্যাচার করতে থাকে।
এক পর্যায়ে ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে কামিন তৈরি করা হয়। এর পরেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। ২ মাস আগে আবারও মারপিট করে বাপের বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে আবারও আর নির্যাতন করা হবে না বলে নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে মুচেলকা দিয়ে পাষন্ড স্বামী গৃহবধু বৈশাখীকে বাড়িতে নিয়ে আসে।
এবারও অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এসব ঘটনার বর্ননা দিয়ে গৃহবধুর বাবা শ্যামকৃষ্ণ দেবনাথ ১০ ডিসেম্বর ডুমুরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাতেও কোন প্রতিকার না হওয়ায় এক পর্যায়ে অভিমান করে গত ২৬ নভেম্বর হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে গৃহবধু বৈশাখী। মুমুর্ষ অবস্হায় তাকে ভর্তি করা হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সেখানে ১ মাস ৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শুক্রবার সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়। গৃহবধুর শশুর গৌতম দেবনাথের ০১৯১৯১৪০১২৯ নম্বর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। গৃহবধুকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করায় থানায় কোন অভিযোগ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডুমুরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মুক্ত রায় চৌধুরী বলেন এ জাতীয় কোন অভিযোগ থানায় দেওয়া হয়নি ।
Please follow and like us: