একাদশে ভর্তি শুরু, জেনে নিন ভর্তি ফি-আবেদন পদ্ধতিসহ সব তথ্য

নিউজ ডেস্ক:

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপের আবেদন শুরু হচ্ছে আজ (৮ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার)। তিন ধাপে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে।

২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে। এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা এবং ননএমপিওতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

যারা আবেদন করতে পারবেন
২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের যে কোনো শিক্ষাবোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষা পাস করা শিক্ষার্থীরা একদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বছরে পাশ করা শিক্ষার্থীরাও ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবেন। বিদেশি কোনো বোর্ড বা প্রতিষ্ঠা থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
টেলিটকের ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) গিয়ে আবেদন করতে হবে।

ভর্তির গ্রুপ নির্বাচন
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেকোনো (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) গ্রুপে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। মানবিক গ্রুপ থেকে মানবিক ও ব্যবসায় আবেদন করা যাবে। ব্যবসায় বিভাগ থেকেও এই দুই গ্রুপের একটিতে আবেদন করতে পারবে। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে।

কোটা নির্বাচন
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট শূন্য আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিনস্থ দফতর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে তা মেধা কোটায় বিবেচিত হবে।

ভর্তি ফি
একাদশের ভর্তির ক্ষেত্রে সেশন চার্জ ও ভর্তি বাবদ এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটনে বাংলা ভার্সনে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বেইরের মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার, ইংরেজিতে ৩ হাজার টাকা, জেলা শহরে বাংলায় ২ হাজার, ইংরেজিতে ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা/মফস্বল পর্যায়ে বাংলায় ১ হাজার ৫০০ ও ইংরেজিতে এক হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন ফি নেওয়া যাবে না।

ননএমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটনে বাংলা ভার্সনে ৭ হাজার ৫০০, ইংরেজি ভার্সনে ৮ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলায় ৫ হাজার, ইংরেজিতে ৬ হাজার, জেলা শহরে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা/মফস্বলে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফি আদায়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে রশিদ দিতে হবে। দরিদ্র, মেধাবী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে উল্লেখিত সব ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলা হয়েছে। সব ফি’র বিবরণ স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বোর্ডে ঝুলিয়ে দিতে হবে। কোনোভাবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না।

তিন ধাপে আবেদন
ভর্তির জন্য প্রথম ধাপের অনলাইন আবেদন শুরু হবে ৮ ডিসেম্বর, চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। যারা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবদেন করেছে তাদেরও এ সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। প্রথম ধাপের আবেদন ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিস্পত্তি করা হবে। পুনঃনিরীক্ষণে ফলাফল কারও পরিবর্তন হলে সে আগের আবেদন বাতিল করে ২৬ ডিসেম্বর ফের অনলাইন আবেদন করতে পারবে। একই দিনে প্রথম ধাপের আবেদনকারীরা পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। ৩১ ডিসেম্বর (রাত ৮টায়) এ ধাপের মেধা তালিকা বা ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিশ্চয়ন করা যাবে। যারা নিশ্চয়ন করবে না তাদের আবেদন বাতিল হবে।

দ্বিতীয় ধাপের আবেদন ৯ থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এ ধাপের ফলাফল ১২ জানুয়ারি (রাত ৮টায়) প্রকাশ করা হবে। নিশ্চয়ন চলবে ১৩ থেকে ১৪ জানুয়ারি। তৃতীয় ধাপের আবেদন ১৬ জানুয়ারি ও ফলাফল প্রকাশ ১৮ জানুয়ারি। এ ধাপের নিশ্চয়ন ১৯ থেকে ২০ জানয়াারি পর্যন্ত। যারা ভর্তির জন্য নির্বাচন হবে তাদের ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি হতে হবে। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। তিন ধাপে অনলাইন আবেদন গ্রহণ ও মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। তিন ধাপেও যদি কেউ ভর্তি থেকে বঞ্চিত থাকে তবে আরও একটি ধাপ বাড়ানো হবে। সারাদেশে পর্যাপ্ত শূন্য আসন আছে, তাই কেউ ভর্তি থেকে বঞ্চিত হবে না বলে জানান তিনি।

জানা যায়, সারাদেশে ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে পাঠদান করানো হয়। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৫৬৫টি। ডিপ্লোমা ইন কমার্স প্রতিষ্ঠান সাতটি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি) পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ১৮শ। কলেজ ও মাদরাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে আছে প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার। এছাড়া কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে প্রায় ৯ লাখ আসন রয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে এ বছর পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও আসন শূন্য থাকবে প্রায় ১৬ লাখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)