দরগাহপুরে ক্ষেতের ধান রক্ষার আবেদন
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুরে কৃষকের প্রাণের ফসল ধান কেটে নেওয়ার সময় পর্যন্ত ধান রক্ষার দাবী জানিয়েছে অসহায় কৃষকরা। দরগাহপুর মৌজায় অসংখ্য কৃষক আমন ধান চাষ করেছেন। উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি স্বত্বেও কৃষকরা শেষ পর্যন্ত ঋণ নিয়েও ধান ক্ষেতে প্রয়োজনীয় জন মজুর, সার-বিশ প্রয়োগ করে ক্ষেতের ফসল গড়ে তুলতে চেষ্টা করে আসেছেন। বর্তমানে ক্ষেতে চলছে ভরা মৌসুম। বেশীর ভাগ জমির ধান বড় বড় শিষে দুলছে। অল্প সময়ের মধ্যে ধান পেকে যাবে। কৃষকরা এখন দিন গুনছে। ৩ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে সকল ক্ষেতে ধান কাটা যাবে।
এসব জমি আগে তারা ডিসিআর প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখলিকার ছিলেন। বর্তমানে নদী খননের প্রয়োজনে ডিসিআর বন্ধ রয়েছে। কৃষকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কোন অনাবাদি পতিত জমি ফেলে রাখা যাবেনা। শস্য চাষের আওতায় আনতে হবে। কৃষকরা তাই পড়ে থাকা জমিতে মাটি কাটার পূর্বেই একটি ফসল পেতে ঝাপিয়ে পড়েন। তাই কৃষক শহিদুল প্রায় ১০ বিঘা জমিতে, মাজেদ সরদার ৩ বিঘা, ছিদ্দিক সরদার ১ বিঘা, জামাল সরদার ৬ বিঘা, খোকন ২ বিঘা, আবুল সরদার ৬ বিঘা, আনোয়ার ৩ বিঘা, মুছা গাজী ৩ বিঘা, আবুল হোসেন ২ বিঘা ও শফিকুল ৩ বিঘাসহ অর্ধশতাধিক কৃষক ধান চাষ করেছেন।
দুঃখ জসক হলেও সত্য সম্প্রতি নদী খনন কাজের জড়িন মাটি কাটার যন্ত্র (বেকু মেশিন) দিয়ে মাটি কেটে ফসল ক্ষেতে ধানের উপর ফেলান হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ধান ক্ষেতে মাটি ফেলে ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে। ফলে কৃষকদের মাথায় হাত উঠেগেছে। তাদের দাবী ৩ দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তারা ধান কাটতে পারবে। ধান ক্ষেত বাদ রেখে পাশে মাটি কাটার কাজ করলে এবং ব্রীজের পশ্চিম পাশে শ্রীধরপুর মৌজায় কোন ধান চাষ করা হয়নি, সেখানে কাজ করা হলে, কাজ শেষের আগেই ধান কাটা হয়ে যাবে। তখন দরগাহপুর মৌজার ধান ক্ষেত এলাকায় কাজ করা হলে কৃষকরা বেচে যাবে।
এব্যাপারে দরগাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মিরাজ আলী বলেন, অসহায় কৃষকদের বেঁচে থাকার উপায় ধান ফসল। যা কয়েকদিনের মধ্যে কেটে নেওয়া সম্ভব। তাদেরকে একটু সময় দিয়ে ফসল ঘরে তোলার সুযোগ করে দেওয়া মানবিক দাবী। যা মানা হলে নদী খননের কোন ব্যাঘাত হবেনা। তিনি সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি দেখতে আহবান জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান জানান, কৃষকরা অনেক টাকা খরচ করে ভবিষ্যৎ খাদ্য ঘাটতে পুরনে ধান চাষ করেছেন। এখন ধান ঘরে উঠার সময়। এসময় ধানের ক্ষেতে মাটি ফেলে ক্ষতির ঘটনা দুঃখ জনক। তাদেরকে ধান ঘরে উঠানোর মত কিছু সময় দিয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইয়ানুর রহমান স্যারকে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।